রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯
রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দর্শকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতোই। নিরাশও হতে হয়নি তাঁদের। রাজশাহীর দর্শকেরা দেখেছেন রোমাঞ্চকর এক লড়াই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের যুব ওয়ানডে সিরিজটিই অবশ্য রোমাঞ্চকর ছিল।২-২ ম্যাচে সমতা থেকে শেষ ম্যাচে নেমেছিল দুই দল। তাতে ৩ উইকেটে জিতে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
২১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ ৪৮ রানে ২ উইকেট হারালেও ওপেনার আদিল বিন সিদ্দিক ও আরিফুল ইসলামের তৃতীয় উইকেট জুটিতে অনেকটাই এগিয়ে যায়। দুজন যোগ করেন ৮৭ রান। ৭০ বলে ৫৮ রান করা আদিলের উইকেটে ভাঙে সে জুটি। আরিফুল অবশ্য ঠিকই আগলে রাখেন ইনিংস।
৪ উইকেটে ১৭৯ রানের স্কোর নিয়ে সহজ জয়ের পথেই এগোচ্ছিল স্বাগতিকেরা। সেটিই হুট করে পরিণত হয় ৭ উইকেটে ১৮৯ রানে। তুলে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন ৮১ বলে ৭১ রান করা আরিফুলও। ক্রিজে এরপর নতুন দুই ব্যাটসম্যান—অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান ও রাফি উজ্জামান। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি বাংলাদেশকে পার করে নিরাপদেই। অবশ্য আদিল ও আরিফুলের ৮০-পেরোনো স্ট্রাইক রেটের ফিফটি ইনিংস নিশ্চিত করে—হাতে পর্যাপ্ত বল থাকছে বাংলাদেশের। মাহফুজুর ও রাফি তাই ঝুঁকি না নিয়েই পার করাতে পারেন দলকে। এর আগে প্রথম ইনিংসেও বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার পেছনে বোলিংয়ে অন্যতম ভূমিকা রাখেন এ দুজন।
টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসটা এগিয়েছে প্রায় আগের ম্যাচের গতিতেই। গুচ্ছাকারে উইকেট হারিয়েছে তারা। চতুর্থ উইকেটে ৫২ ও পঞ্চম উইকেটে ৪৪ রান ছাড়া সেভাবে কোনো জুটিই বড় হয়নি। তিনে নামা ডেভিড টিগার করেছেন ইনিংসে একমাত্র ফিফটি।
পেসার রিজান হোসেনের তোপে ১৮ রানেই ২ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকার যুবারা, রাফি এসে তাদের পরিণত করেন ৪৯ রানে ৩ উইকেটে। টিগার ও রিচার্ড সেলেস্টওয়ানের চতুর্থ উইকেট জুটিতে এরপর ওঠে ৫২ রান। সেলেস্টওয়ানকে ফিরিয়ে সে জুটি ভাঙেন আরিফুল।
অধিনায়ক জুয়ান জেমসকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে আরও ৪৪ রান তোলেন টিগার। সে জুটি ভাঙে টিগারের উইকেটেই, রোহানাত দৌলার বলে ক্যাচ দেন তিনি। রোহানাত, রাফি ও মাহফুজুর রাব্বি এরপর আঘাত করেন নিয়মিত বিরতিতে। ৬৫ রান তুলতে শেষ ৬ উইকেট হারায় সফরকারীরা। ইনিংসের ২ বল বাকি থাকতেই অলআউট তারা।
রিজান ২ উইকেট নেন ৮ ওভারে মাত্র ১৫ রান দিয়ে। রোহানাত ও রাফিও নেন দুটি করে উইকেট। সর্বোচ্চ ৩ উইকেট অধিনায়ক রাব্বির, তিনি খরচ করেন ৪৩ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৯.৪ ওভারে ২১০ (টিগার ৬৩, জেমস ৩২, সেলেস্টওয়ান ২৭; অল্ডার ২০; রাব্বি ৩/৪৩, রিজান ২/১৫, রাফি ২/৩৯, রোহানাত ২/৫৩, আরিফুল ১/১৮)।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৭.১ ওভারে ২১১/৭ (আরিফুল ৭১, আদিল ৫৮, শিহাব ১৭, রাব্বি ১৫*; অল্ডার ৪/২৩, জেমস ৩/৩২)।
ফল: বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ৩ উইকেটে জয়ী।