November 22, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্ট

রামপালে দিনমজুরের হাত-পা ভেঙে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বাগেরহাটের রামপালে এক দিনমজুরকে মারপিট করে হাত-পা ভেঙে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। গত রবিবার রাতে কাজ শেষে বাড়ী ফেরার সময় রামপাল উপজেলার কাদিরখোলা এলাকার রাস্তায় হামলার শিকার হন হেমায়েত মোল্লাহ (৪৫) নামের ওই দিনমজুর। গুরুতর আহত হয়ে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন হেমায়েতের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে দাবী তার পরিবারের।
আহত হেমায়েত মোল্লা বলেন, রবিবার রাতে কাদির খোলা মোড়ে স্থানীয় সন্ত্রাসী আব্বির, খুলনার বাগমারা এলাকার বাসিন্ধা লিঠু আনাম, আওরঙ্গ সর্দার তুহিন, মনোজিত, ইমরান খোকন, নুরালি বাবলু হোসেন, ফজলুসহ ১৫/২০ জন তার গতি রোধ করে বেধড়ক মারপিট করে রাস্তার উপরে ফেলে রাখে তাকে। এসময় তাকে উদ্ধারের জন্য উপস্থিত জনতা ছুটে আসলে তাদেরকে মারতে উদ্যত হয় ও দেখে নেওয়ার হুমকি সন্ত্রাসীরা। এভাবে এক থেকে দেড় ঘণ্টা পড়ে থাকে তার নিথর দেহ। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশে এসে উদ্ধার করে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠায়।
হেমায়েত মোল্লার মা লাইলী বেগম জানান, তার ছেলের ডান হাতের আঙ্গুল ও কব্জি এবং বাম পা ভেঙে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। চিকিৎসকের নির্দেশে তারা কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও এক্স রে করিয়েছেন। তাতে দেখা গেছে হাতের হাড় দুই জায়গায় ও ডান পায়ে গোড়ালি ভেঙে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তার ছেলেকে খুলনা মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেছেন। একই সাথে তিনি অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জানিল হাসান জামুর আত্মীয় হওয়ার তাদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ বিষয়ে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সামসুদ্দিন জানান, এই ঘটনায় হেমায়েত মোল্লার মা বাদী হয়ে রামপাল থানায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার প্রধান আসামী খোকনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ। ওসি আরও জানান, কিছুদিন পূর্বে রামপাল এলাকায় একটি হত্যার ঘটনা ঘটে। ওই হত্যা মামলায় আসামী ছিলেন হেমায়েত মোল্লা। ওই ঘটনার জের ধরে হামলার শিকার হন হেমায়েত।
তবে অভিযুক্ত আবির শেখ জানান, রামপালের সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী ফিরোজ ঢালীকে হত্যা মামলার আসামী হেমায়েত মোল্লা। এরপর তিনি দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। এখন এলাকায় আসার পর হয়তো স্থানীয়দের দ্বারা হামলার শিকার হতে পারেন। তবে তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে জানান।
হেমায়েত মোল্যার বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে ঐ এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দা জানায়, তার মা লাইলী বেগম খুকী সাবেক সংকক্ষিত ইউপি সদস্য। হেমায়েত মোল্ল্য কাদির খোলা মোড়ে একটি সিংঙ্গাড়ার দোকান ছিল। সাবেক চেয়্যারম্যান জামিল হাসানের নির্দেশে ঐ দোকানটি উচ্ছেদ করে দেয়। এরপর সে ভ্যান চালিয়ে জীবনযাপন করত। তাছাড়া এলাকাবাসী আরও জানায়, রামপালে রহস্য ঘেরা ফিরোজ হত্যাকান্ডে অসংখ্য নিরীহ লোকের নাম আছে। হেমায়েত মোল্যা তাদেরই একজন। এই মামলায় আসামী হওয়ার পর তার ভ্যানটি বিক্রি করে দেয়। আদালত থেকে জামিনে মুক্তি নিয়ে সে দিনমজুরের কাজ করত।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *