যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে ভারতের অবিচল থাকা প্রশংসার যোগ্য : রাশিয়া
রুশ জ্বালানি তেল ক্রয়কে ঘিরে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েনে জড়িয়ে পড়া সত্ত্বেও অবিচল থাকায় ভারতের প্রশংসা করেছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ভারত মুক্ত বাণিজ্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েনের সময় তার প্রমাণ রেখেছে নয়াদিল্লি।
মঙ্গলবার ইন্দোনেশীয় সংবাদমাধ্যম কম্পাসকে সাক্ষাৎকার দেন ল্যাভরভ। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে— এমন সব দেশকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উদাহারণ হিসেবে আমরা ভারতের কথা বলতে পারি। আমাদের দীর্ঘদিনের বাণিজ্যিক মিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার ভারতের ওপর অতি উচ্চমাত্রার রপ্তানি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।”
“কিন্তু ভারত এই চাপের কাছে নত হয়নি এবং মুক্ত বাণিজ্যনীতির প্রতি অবিচল থেকেছে। এটি সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। এক সময় মুক্ত বাণিজ্য নীতির সবচেয়ে বড় সমর্থক ছিল রাশিয়া, এখন তারাই এই নীতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে।”
গত আগস্ট মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ভারতের। এই টানাপোড়েনের প্রধান কারণ ভারতের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতি উচ্চমাত্রার রপ্তানি শুল্ক আরোপ।
২০২৪ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ের পর চলতি বছর ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ করেন ট্রাম্প। সে সময় মার্কিন বাজারে ভারতীয় পণ্যের ওপর ধার্যকৃত রপ্তানিশুল্ক ছিল ১৫ শতাংশ। গত এপ্রিলে এই শুল্ক ২৫ শতাংশে উন্নীত করেন ট্রাম্প।
পরে রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি তেল কেনার দায়ে চলতি আগস্টের প্রথম দিকে ভারতের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। এর ফলে ভারতের ওপর ধার্যকৃত শুল্কের পরিমাণ পৌঁছায় ৫০ শতাংশে।
গত ২৭ আগস্ট থেকে বর্ধিত এই শুল্ক কার্যকর হয়েছে। উচ্চমাত্রার এই শুল্কের আঘাত ইতোমধ্যে অনুভূত হচ্ছে ভারতের অর্থনীতিতে।
ধারণা করা হচ্ছিল যে ট্রাম্প শুল্ক আরোপের পর তা হ্রাসের জন্য ওয়াশিংটনের সঙ্গে দেন-দরবার করবে নয়াদিল্লি; কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, দেশের গরিব ও খেটে খাওয়া লোকজনের স্বার্থে রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনা অব্যাহত রাখবে তার নেৃতৃত্বাধীন সরকার।