November 25, 2024
আন্তর্জাতিকলেটেস্ট

মুসলিম শিক্ষার্থীকে সহপাঠীদের দিয়ে চড় : ভারতে সেই স্কুল বন্ধ

ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি স্কুলে এক মুসলিম শিক্ষার্থীকে চড় মারার ঘটনার পর ওই স্কুল বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত চলাকালে স্কুলটি বন্ধ রাখা হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে এ–সংক্রান্ত একটি নোটিশ পাঠিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর।

এদিকে বন্ধ থাকার কারণে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের যেন পড়াশোনার ক্ষতি না হয়, সে জন্য তাদের কাছের স্কুলগুলোতে ভর্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই নোটিশে। এ কাজে সহায়তা করবেন শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা।

গত বৃহস্পতিবার মুসলিম শিক্ষার্থীকে চড় মারার ঘটনাটি ঘটে রাজ্যের মুজাফফরনগরের খুব্বাপুর গ্রামের নেহা পাবলিক স্কুলে। তৃপ্তি ত্যাগী নামের ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চড় মারার নির্দেশ দিয়েছিলেন। স্কুলটিতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে।

অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি শিশু এক পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছে আর শিক্ষিকা তৃপ্তি অন্য শিশুদের একে একে উঠে এসে ওই শিশুকে চড় মারতে নির্দেশ দিচ্ছেন। ক্যামেরার পেছনে থাকা একজনের উদ্দেশে তৃপ্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি তো বলেই দিয়েছি, যত মুসলিম বাচ্চা আছে, তোমরা এখান থেকে চলে যাও।’

তৃপ্তি ত্যাগীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তবে এটিকে ‘তুচ্ছ ঘটনা’ দাবি করে তৃপ্তি ত্যাগী বলছেন, সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তিনি এমন নির্দেশ দেননি। ওই মুসলিম শিক্ষার্থী স্কুলে বাড়ির কাজ না করে নিয়ে আসায় তাকে এমন শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

আত্মপক্ষ সমর্থন করে তৃপ্তি বলেন, ‘শিশুর মা-বাবা আমাকে তার ব্যাপারে কঠোর হতে বলেছিলেন। আমি প্রতিবন্ধী, এ কারণে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বলেছিলাম তাকে চড় মারতে, যেন ও তার বাড়ির কাজ করতে শুরু করে।’

এ নিয়ে মুসলিম ওই শিশুটির বাবা বলেছেন, ‘আমার ছেলের বয়স সাত বছর। গত ২৪ আগস্ট এ ঘটনা ঘটেছে। ওই শিক্ষকের নির্দেশে অন্য শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানকে বারবার মেরেছে। এক–দুই ঘণ্টা ধরে তার ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। সে এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।’

এদিকে চড় মারার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক নেতা। আর ওই শিশুর বাবা বলেছেন, তিনি স্কুলটির বিরুদ্ধে কোনো মামলা করবেন না। তবে ওই স্কুলে তাঁর সন্তানকে আর পাঠাবেন না।

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

শেয়ার করুন: