ময়দা কেনার অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের হামলা
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ২২ ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে।
বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকটে উত্তরাঞ্চলের এক হাসপাতালে শতাধিক রোগীর জীবন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সোমবার সকালে উত্তর গাজায় জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায়। ড্রোন থেকে ছোড়া এক ক্ষেপণাস্ত্রে তিনজন মারা যান। তাদের লক্ষ্য করেই হামলা হয়েছিল। বিভিন্ন সূত্র আল-জাজিরাকে এই খবর জানিয়েছে।
গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন, ভুক্তভোগীরা খাবারের সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায় যেতে চাইলে ড্রোন হামলার শিকার হন।
তিনি বলেন, পাশেই তারা মারা যান। তাদের মরদেহ এখনো সড়কে পড়ে আছে। বোমা হামলার ওই এলাকায় গিয়ে সড়ক থেকে লাশ সরানোর সাধ্য কারো নেই।
৬৫ দিন ধরে জাবালিয়া ইসরায়েলের দখলে। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি খাবার, পানির সরবরাহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেকে ক্ষুধার্ত থাকছেন। জাবালিয়া মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। তারা ময়দা কেনার জন্য সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন।
মাহমুদ বলেন, দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে সীমিত পরিমাণে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর কারণে দক্ষিণ গাজার পরিস্থিতিও উত্তর গাজার মতো ক্ষুধার্ত পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরছে।
মধ্য গাজায় আল-আকসা হাসপাতালের বাইরে থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক জানান, বুরেজ শরণার্থী শিবিরের এক আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। হামলায় এক পরিবারের নয়জনের প্রাণ গেছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
তিনি বলেন, আজ সকালে স্বজনরা হাসপাতালের মর্গ থেকে মরদেহ সংগ্রহ করতে হাজির হন। কিছুক্ষেত্রে হাসপাতাল মরদেহে পূর্ণ হয়ে যায়। মরদেহ রাখার জন্য যথেষ্ট কক্ষ থাকে না।
উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালের প্রধান হুসসাম আবু সাফিয়া বলেন, বিদ্যুৎ, অক্সিজেন ও পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় শতাধিক রোগীর জীবন বিপন্ন। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বোমা হামলায় হাসপাতাল তীব্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শুক্রবার ইসরায়েল জানায়, তারা বেইত লাহিয়ার ওই স্থাপনার আশেপাশে অভিযান চালাচ্ছে, তবে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের পাশে অবস্থিত হাসপাতালটিতে সরাসরি হামলা চালায়নি। উত্তর গাজার অন্যতম শেষ কার্যকরী হাসপাতাল এটি। শুক্রবার ইসরায়েলি হামলায় হাসপাতালের চার কর্মী নিহত হন।
যুদ্ধে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৭৫৮ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।