‘ভেঙে গেছে তৃণমূল, ভোটে ব্যাঘাত ঘটানোর শক্তি আ.লীগের নেই’
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ব্যাঘাত ঘটানোর মতো শক্তি কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের তৃণমূল ভেঙে গেছে বা প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোতে মিলিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনে ব্যাঘাত ঘটানোর মতো শক্তি তাদের হাতে অবশিষ্ট নেই।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।
ফেব্রুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে জানিয়ে তিনি আরও লেখেন, সম্ভবত সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনও হতে পারে। তিনটি সাম্প্রতিক ঘটনা এমন বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করেছে।
শফিকুল আলম ফেসবুকে স্ট্যাটাসে যে তিনটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন সেগুলো হলো-
১ বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণায় কোনো গোলযোগ হয়নি
বিএনপি সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করলে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে- এমন শঙ্কা ছিল সর্বত্র। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, শত শত বিদ্রোহী প্রত্যাশী প্রার্থী সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানাবেন, বিক্ষোভ করবেন, এমনকি দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষও হতে পারে। কিন্তু এক-দুটি ক্ষুদ্র ঘটনার বাইরে পুরো ঘোষণা প্রক্রিয়া আশ্চর্যজনকভাবে শান্তিপূর্ণ ছিল।
এতে প্রমাণিত হয় বিএনপি নেতৃত্ব যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েছিল। মনোনয়ন নিয়ে দলের ভেতরে বিস্তৃত গ্রহণযোগ্যতা দেখায় যে, নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোটের সময় দলীয় অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের সম্ভাবনা খুবই কম।
২. আ.লীগের ক্ষমতার সীমা আমরা জানি এবং তা খুবই নগণ্য
আওয়ামী লীগ প্রায়ই দাবি করে যে তাদের বিশাল তৃণমূল নেটওয়ার্ক আছে, যা যেকোনো ভোটকে ব্যাহত করতে সক্ষম। কিন্তু গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ করেছে- তাদের বাস্তব মাঠ-সংগঠনের ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত। দলটি এখন মূলত ভাড়াটে কিছু টোকাই-শ্রেণির সমস্যা সৃষ্টিকারীর ওপর নির্ভরশীল, যারা পরিত্যক্ত বাসে আগুন ধরানো, ৩০ সেকেন্ডের ঝটিকা মিছিল করা, কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এআই-ভিত্তিক বিভ্রান্তি ছড়ানোর মতো কাজ করতে পারে।
ফলে আ.লীগ কার্যত ফেসবুক-নির্ভর একটি প্রতিবাদী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে, মাঠে যার কোনো উল্লেখযোগ্য সাংগঠনিক শক্তি নেই। আমার দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ এখনও যৌক্তিক যে, দলটির তৃণমূল ভেঙে গেছে বা প্রতিদ্বন্দ্বী দলের সঙ্গে মিলিয়ে গেছে। এই বাস্তবতা বিবেচনায়, নির্বাচনে আ.লীগ কোনো ব্যাঘাত ঘটানোর সম্ভাবনা খুব কম।
৩. পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন আরও সংগঠিত
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আইনশৃঙ্খলার দৃশ্যমান স্থিতিশীলতা পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসিসহ সবার মধ্যে নতুন আস্থা সৃষ্টি করেছে। নির্বাচন প্রক্রিয়া তদারকির জন্য সবচেয়ে সক্ষম কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি নিশ্চিত তারা জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষম হবেন।

