ভারতে সেনাপ্রধানের অফিস থেকে সরেছে সেই ঐতিহাসিক ছবি
একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনাবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
আত্মসমর্পণের কাগজের স্বাক্ষর করছেন লেফটেন্যান্ট এ কে কে নিয়াজি। উপস্থিত ভারতের সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা।
এই ঐতিহাসিক ছবির একটি পেইন্টিং এতদিন ভারতীয় সেনাপ্রধানের অফিসে সগৌরবে টাঙানো ছিল ভারতীয় সেনার ঐতিহাসিক বিজয়ের স্মারক হিসেবে।
বিদেশি অতিথি ও বিদেশি সেনা জেনারেলদের স্বাগত জানানো হতো যে লাউঞ্জে সেখানেই পিছনের দেওয়ালে ঝোলানো থাকতো ছবিটি। দশকের পর দশক এই ছবিটি দেখতে সবাই অভ্যস্ত হলেও সম্প্রতি দেখা গেছে সেখান থেকে ছবিটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
লাগানো হয়েছে নতুন ছবি। মিডিয়াতে এই সংবাদ প্রকাশের পর প্রবল সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সবচেয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রবীন সেনাকর্তারা।
অনেক সমালোচকের মতে, রাজনীতির ছোঁয়া রয়েছে এর পেছনে। বিজয় দিবসের আগে এই কাজটি কেন করা হয়েছে সেই প্রশ্নও উঠেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সম্ভবত ইন্দিরা গান্ধীর সাফল্যে ও ঐতিহ্য থেকে দূরে সরে থাকতে এই নতুন পেইন্টিং লাগানো হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই।
সাবেক এক ব্রিগেডিয়ার সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, এই পরিবর্তন ঘটানোর ক্ষেত্রে সামরিক নেতৃত্ব কোনও আপত্তি করেননি। বরং রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছেন।
সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচ এস পানাগ সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, এই ছবি পেইন্টিংটি ছিল হাজার বছরের মধ্যে ভারতের প্রথম বড় ধরনের সামরিক বিজয়ের প্রতীক। তিনি কটাক্ষ করে লিখেছেন, ভারতের উচ্চপদস্থরা সেটিকে সরিয়ে এখন বিশ্বাস করছেন আগামী দিনে বিজয়ের ক্ষেত্রে পুরাণ, ধর্ম ও ভঙ্গুর সামন্ত অতীতই প্রেরণা জোগাবে।
আরেক সাবেক মেজর জেনারেল যশ মোর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, বাংলাদেশ যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের অত্মসমর্পণের ছবিটি হচ্ছে আধুনিক ইতিহাসে ভারতের একমাত্র সামরিক বিজয়ের স্মৃতি। তিনি হতাশা প্রকাশ করে লিখেছেন, সেই ছবিটিকে সরিয়ে নেয়ার ফলে একই সঙ্গে প্রবীন সেনা ও ইতিহাসে উৎসুকদের সমানভাবে দুঃখ দিয়েছে।