ভারতের দাবিকৃত এলাকায় চীনের নতুন শহর ঘোষণা
দীর্ঘদিন ধরেই সীমান্ত সমস্যা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে চীন ও ভারত। সম্প্রতি দেশ দুটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। তবে এমন অবস্থার মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
চীন জিনজিয়াংয়ে দুটি নতুন কাউন্টি (প্রশাসনিক সদর দপ্তর) তৈরি করেছে, যার মধ্যে একটি ভারতীয় অঞ্চল নিয়ে গঠিত। চীনের সিনহুয়া নিউজ এজেন্সির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ডেকানহেরাল্ডডটকম।
সিনহুয়ার বরাতে বলা হয়েছে, ‘হোটান প্রিফেকচার দ্বারা পরিচালিত কাউন্টিগুলো চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং স্টেট কাউন্সিল দ্বারা অনুমোদিত হয়েছে। হংলিউ এবং জিডুলা নামে দু’টি শহরকে যথাক্রমে হিয়ান এবং হেকাংয়ের ‘কাউন্টি’ (প্রশাসনিক সদর দফতর) হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চীনের দখলকৃত আকসাই চীনের প্রায় ৩৮ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে হিয়ান কাউন্টি।
ডেকানহেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানায়নি। তবে নয়াদিল্লির সূত্র জানিয়েছে, চীনের এমন একতরফা পদক্ষেপ সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় কোনো প্রভাব ফেলবে না।
সীমান্ত আলোচনার জন্য নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের বিশেষ প্রতিনিধি– ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই গত ১৮ ডিসেম্বর বৈঠক করেন। এর মাধ্যমে গত ৫ বছর ধরে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে বন্ধ থাকা আলোচনা পুনরায় শুরু হয়েছিল।
ভারত ও চীনের বিশেষ প্রতিনিধিরা ২০০৩ সালে সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আলোচনা শুরু করেছিলেন। তারা ২০০৫ সালে সীমান্ত প্রশ্ন নিষ্পত্তির জন্য রাজনৈতিক আলোচনা এবং গাইডিং নীতি নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় পাঁচ বছর ধরে স্থগিত থাকা দুই দেশের বিশেষ প্রতিনিধিরা সীমান্ত আলোচনা পুনরায় শুরুর মাত্র ১০ দিন পরে চীন এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্ব লাদাখের সীমান্তবর্তী আকসাই চীনে ভারতের প্রায় ৩৮ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা ছাড়াও পাকিস্তান ১৯৬৩ সালে সাক্সগাম উপত্যকায় ভারতের প্রায় ৫ হাজার ১৮০ বর্গকিলোমিটার অঞ্চল চীনের কাছে হস্তান্তর করে।
অন্যদিকে বেইজিং ভারতের অরুণাচল প্রদেশকে চীনের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে আসছে। অধিকৃত তিব্বতের ওপর সার্বভৌমত্বের দাবির ভিত্তিতে এটিকে ‘জাংনান’ (দক্ষিণ তিব্বত) বলে অভিহিত করে তারা। এছাড়া, বেইজিং ভারতের হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড রাজ্যে ২ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা দাবি করে।