January 22, 2025
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

বিয়ে করলে দিতে হবে না কর

বিয়ের ক্ষেত্রে আরোপিত কর বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ আইনসহ সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বিয়ে সম্পাদনে একটা কর ছিল। মন্ত্রণালয় এই অযৌক্তি কর আরোপকে বাতিল করেছে।’

বিয়ের কর বাতিলের সিদ্ধান্ত কবে থেকে কার্যকর হবে- একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘বিয়ের ট্যাক্সে আজ সাইন করলাম। আপনি ট্যাক্স ছাড়া বিয়ে করতে পারবেন।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিয়ের ফরমে লেখা থাকতো বিবাহিতা নাকি কুমারী। এটা একটা মেয়ের জন্য অমার্যাদাকর শব্দ। সেটা আমরা অবিবাহিতা করে ফেলেছি। এমন ছোটো ছোটো অনেক কাজ করেছি। আরও অনেক কাজ করার চিন্তা আছে।’

বিয়ের কোন কর বাতিল করা হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে তা জানাননি আইন উপদেষ্টা। তবে আইন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় মানুষের জন্য ২০১৬ সালে এই কর আরোপ করা হয়।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আদর্শ কর তফসিল ২০১৬ এর ১০ (৪) এবং মিউনিসিপাল করপোরেশন (ট্যাক্সেশন) আইন ১৯৮৬ এর ৫০ ধারা অনুযায়ী এই কর আদায়ের ঘোষণাও দিয়েছিল।

ওই কর তফিসিল অনুযায়ী, প্রথম বিয়ে বা প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর আবারও বিয়ে করার জন্য বরকে ১০০ টাকা কর দিতে হবে। প্রথম স্ত্রীর জীবদ্দশায় দ্বিতীয় বিয়ের জন্য বরকে ৫ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর জীবদ্দশায় তৃতীয় বিয়ের জন্য ২০ হাজার টাকা কর দিতে হবে। আর চতুর্থ বিয়ের জন্য বরকে কর হিসেবে দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা। তবে স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন হলে বা সন্তানহীন হলে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। সেক্ষেত্রে পরবর্তী বিয়ের জন্য বরকে ২০০ টাকা কর দিতে হবে। এর পাশাপাশি প্রতিটি সন্তান দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা হারে কর দিতে হবে।

তবে এই কর বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন আলেম-ওলামারা।

অনলাইন হলো ডকুমেন্ট সত্যায়ন প্রক্রিয়া

আইন উপদেষ্টা বলেন, ৩৬ ধরনের ডকুমেন্ট আইন মন্ত্রণালয় সত্যয়ন করে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে এই সত্যায়ন প্রক্রিয়া অনলাইনভিত্তিক করা হয়েছে। তাই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সত্যায়ন করার জন্য জনগণকে আর লাইনে দাঁড়াতে হয় না। আমি শুনেছি আমাদের আইন মন্ত্রণালয়ের সামনে দীর্ঘ লাইন থাকতো সত্যায়ন করার জন্য। বর্তমান পদ্ধতিতে দুই-একদিনের মধ্যেই ঘরে বসে কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে সত্যায়নের পর বাংলাদেশি নাগরিকদের বিদেশি দূতাবাসে সার্ভিস ফি দিয়ে সত্যায়ন করা লাগছে না। আমাদের হিসাব অনুযায়ী বছরে জনগণের ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা বেঁচে যাচ্ছে।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার আনার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির আরও কিছু এরিয়া চিহ্নিত করেছি। ১৫ থেকে ২০টি এরিয়া ইতিমধ্যে চিহ্নিত করেছি। আমরা সমস্ত আইনগত সংস্কার আশা করি আগামী ছয় মাসের মধ্যে করবো। আমাদের যে প্রত্যাশা সবগুলো সংস্কার করে যাবো।

আসিফ নজরুল বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিচার বিভাগ সংস্থার কমিশন করা হয়েছে। তাদের সাহায্য নিয়ে আমরা এ কাজগুলো করার চেষ্টা করছি। যাতে একটা সমন্বয় থাকে।

শেয়ার করুন: