November 21, 2024
খেলাধুলা

বিপিএলে সবশেষ দুই আসরে ৩০টির বেশি দুর্নীতি

বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় টুর্নামেন্ট বিপিএল। প্রতিযোগিতাটি মাঠে গড়ালে মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে কতটা জনপ্রিয় হয়েছে দেশের মাটিতে। যদিও শুরুর আসর থেকেই নেতিবাচক কারণে শিরোনাম হয়েছে একাধিকবার। ফিক্সিংকান্ডে জড়িয়ে ক্রিকেটাররা যেমন হয়েছেন নিষিদ্ধ, পেয়েছেন শাস্তি। তবে এবার আরও বড় অভিযোগ টুর্নামেন্ট নিয়ে। এই প্রতিযোগিতার সবশেষ দুই আসরে ৩০টির বেশি দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এমন খবর প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’। আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী সংস্থায় (আকসু) সাত বছর তদন্ত সমন্বয়কের কাজ করা কর্মকর্তা স্টিভ রিচার্ডসন এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ও মালিকদের দুর্নীতি নিয়ে আইসিসি বেশ চিন্তিত।

রিচার্ডসনের সঙ্গে কথা বলে পত্রিকাটি জানিয়েছে, বিপিএলে ৩০টির বেশি দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও কাউকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। এমনকি অনেকে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত খেলাও চালিয়ে যান।

‘কীভাবে ক্রিকেট নিজেকেই খেয়েছে’ শিরোনামে প্রতিবেদন টেলিগ্রাফ বলেছে, বিশ্বজুড়ে চলা বেশ কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট ও লিজেন্ডস লিগে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের বিষয়ে বলা হয়, অন্য অনেক লিগের মতো বিপিএলও দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য আইসিসিকে তালিকাভূক্ত করেনি। এই কাজটি স্বল্প খরচে তারা নিজেরাই করে।

সংবাদমাধ্যমটি অভিযোগ করেছে, বিপিএল কর্তৃপক্ষ দুর্নীতির বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয় না। প্রতিবেদনে লেখা হয়, ‘সর্বশেষ দুই বছরের বিপিএলে ৩০টির বেশি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, কিন্তু একজনও নিষিদ্ধ হয়নি। প্রায়ই দুর্নীর্তির অভিযুক্তরা প্রমাণ হওয়ার আগপর্যন্ত বছরের পর বছর খেলায়ও থেকে যান।’

দুর্নীতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি টেলিগ্রাফকে বলেন, ‘অভিযোগ জানাতে অনেক খেলোয়াড়ই ভয় পান। প্রথম কারণ, যদি তাদের পারিশ্রমিক নাও দেওয়া হতে পারে, দ্বিতীয় কারণ তারা নিজেদের অনিরাপদবোধ করতে পারেন। তারা তখনই জানান, যখন সরাসরি অ্যাপ্রোচ করা হয়। কিন্তু শুধু সন্দেহের ওপর খুব কমই বলেন।’  সংবাদ মাধ্যমটি ঐ ব্যক্তির নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেনি।

টেলিগ্রাফকে রিচার্ডসন বলেন, ‘ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো নিজেদের মতো করে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনার ঝুঁকি আছে। যখন ছোট ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিজস্ব ইভেন্ট কাভার করে, তখন ঝুঁকি হচ্ছে, এর মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী বিধান কি ততটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে? আইসিসি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে, তাদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ও তথ্যের জন্য যোগাযোগ না করে একজন দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তা মাঠে থাকলেই লিগকে সর্বোত্তমভাবে রক্ষা করা যায় না। এর মধ্যে অনেক কিছুই আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সব সময়ই দুর্নীতিবাজরা তৎপর হওয়ার চেষ্টা করেন। এর অর্থ এই নয় যে সব লিগে দুর্নীতিবাজরা কাজ করছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ভালো উদ্দেশ্যের মানুষ, যারা হয়তো বুঝতেই পারছেন না যে তারা কী করছেন।’

বিপিএল নিয়ে এর আগেও অনেকবার অভিযোগ উঠেছে। মোহাম্মদ আশরাফুলের মতো তারকা ক্রিকেটার বিপিএলে ফিক্সিংয়ের অভিযোগে শাস্তি পেয়েছিলেন।

শেয়ার করুন: