বাংলাদেশ ভারতের তিন দিনব্যাপী কৃষি উৎকর্ষ অর্জন বিষয়ক সম্মেলন শুরু হলো আজ
কৃষি উৎকর্ষ অর্জনে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ভারতের যৌথ উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী একটি সম্মেলন শুরু হলো আজ। বাংলাদেশ ও ভারতের আঞ্চলিক পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এতে অংশ নিয়েছেন।
বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, আমরা ক্রমবর্ধমানভাবে একটি উন্মুক্ত এবং গ্লোবালাইজ্ড বিশ্বে বসবাস করছি। ভোক্তাদের এখন সারা বিশ্বের পণ্য সরবরাহকারীদের কাছে যাওয়ার ও তাঁদের নিকট হতে পণ্য কেনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এটা সত্য যে, ভোক্তারা সম্ভাব্য সর্বোত্তম মূল্যে সর্বোচ্চ মূল্যের পণ্যগুলি কিনতে পারার জন্য উপকৃত হচ্ছে। এভাবে বৃহত্তর বাজার সৃষ্টির ও বিপুল আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
ভারতের খাদ্য উৎপাদন শিল্প চারশত বিলিয়ন ডলারের এবং এটি দেশের জনসংখ্যার ৪৫% মানুষের জীবিকার প্রাথমিক উৎস। বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদনেও ভারতের একটি শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে এবং কৃষি ও সংশ্লিষ্ট খাতের পণ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎপাদক হিসেবে ভারতের অবস্থান রয়েছে। এগ্রি স্টার্টআপগুলি বর্তমানে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, টেকসই উদ্যোগ এবং বাজার-চালিত পদ্ধতির বৃদ্ধির সাক্ষী হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডেটা বিশ্লেষণের মতো উদীয়মান প্রযুক্তি গ্রহণের সাথে, এই স্টার্টআপগুলি নির্ভুল কৃষি, স্মার্ট সেচ ব্যবস্থা এবং ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে চাষের অনুশীলনে বিপ্লব ঘটাচ্ছে। উপরন্তু, জৈব চাষ, উল্লম্ব চাষ এবং হাইড্রোপনিক্সের উপর স্টার্টআপ ফোকাস করে, টেকসই কৃষির উপর ক্রমবর্ধমান জোর দেওয়া হচ্ছে। এগ্রি-ফিনটেক স্টার্টআপগুলি কৃষকদের আর্থিক চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করছে, যখন বাজার এবং একত্রিতকরণ প্ল্যাটফর্মগুলি মধ্যস্থতাকারীদের বাদ দিয়ে কৃষকদের সরাসরি গ্রাহকদের সাথে সংযুক্ত করে চলেছে। ডেটা-চালিত চাষ এবং খামার ব্যবস্থাপনা সিস্টেমগুলি কৃষকদের মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে থাকে। পাশাপাশি, বিকল্প প্রোটিন এবং টেকসই খাদ্য উৎপাদনে স্টার্টআপগুলি পরিবেশ বান্ধব খাদ্য বিকল্পের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করছে। সরকারী সহায়তা এবং বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কৃষি স্টার্টআপের বৃদ্ধিতে আরও অবদান রাখছে, যা তাদের কৃষি খাতকে দক্ষতা, টেকসইতা এবং লাভজনকতার দিকে রূপান্তরিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিণত করছে। এরকম একটি সময়ে আমাদের এই উদ্যোগ স্টার্টআপ এবং উদ্যোক্তাদের জন্য তাদের উদ্ভাবনী সমাধান, পণ্য এবং পরিষেবাগুলি প্রদর্শন করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করবে, যা খাদ্য ও কৃষি খাতে রূপান্তরের সম্ভাবনা রয়েছে। এটি বিনিয়োগকারীদের এবং শিল্প নেতাদের অংশীদারিত্ব এবং বিনিয়োগের জন্য নতুন সুযোগ আবিষ্কার করতে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রীমতি ডলি খংলা, সচিব, মেঘালয় ইন্টারন্যাশনাল এক্সপোর্টার্স চেম্বার এন্ড কমার্স, বক্তব্য রাখেন শ্রী সুশিল কুমার ভার্মা, সহ-সভাপতি আইসিসিটি ত্রিপূরা স্টেট কমিটি এন্ড সিইও, মেইলিওর স্কিলস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, ইন্ডিয়া; শ্রী ত্রিরঙ্গা ভারতীয় বোরাহ, পরিচালক, হর্টিকালচার এন্ড ফুড প্রসেসিং অধিদপ্তর, আসাম সরকার, ইন্ডিয়া; বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শ্রী নূর আহমেদ খন্দকার, বাংলাদেশস্থ ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের সহকারী প্রতিনিধি, শ্রী বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, মহা পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, জনাব এটিএম রকিবুল হক, মহাপরিচালক, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। প্রশ্নত্তোর পর্বে দুই দেশের সরকারী পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ নেন।
ঢাকাস্থ হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের পদ্মা হলে শুরু হওয়া এই কর্মশালাটি আগামী ৮ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি তারিখ শেষ হবে।
লুৎফর রহমান, ঢাকা প্রতিনিধি