September 19, 2024
আঞ্চলিক

‘বর্তমান সরকারকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে হবে’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক বলেছেন, গোটা দেশকে বিগত স্বৈরশাসক একটি অন্ধকার কূপের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। মহান আল্লাহ তায়ালা ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচার পালিয়ে যেতে বাধ্য করে সেই অন্ধকার কূপ থেকে জাতিকে উদ্ধার করেছেন। ছাত্র-জনতার তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিপ্লব ব্যর্থ করে দেওয়ার যেকোনো ষড়যন্ত্র দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জামায়াত রুখে দেবে, ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যের লাগাম টানতে হবে। চাল, ডাল, তেল, মাছ, মুরগি, ডিম, দুধ ও শিশুখাদ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েছে। দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জীবিকা নির্বাহ এখন দুঃসহ হয়ে পড়েছে। মূলত এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কারসাজি করে পণ্যের মূল্য তাদের ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দিচ্ছে। একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অপরদিকে ব্যবসা-বাণিজ্যে দুরবস্থা ও শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে চাকরি হারিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য বেঁচে থাকা এখন খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, তীব্র গরমে মানুষের যখন বেহাল দশা তখন বিদ্যুতের লোডশেডিংও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি নাকাল হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের মানুষ। তিনি অবিলম্বে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর আল ফারুখ সোসাইটিতে অনুষ্ঠিত খুলনা অঞ্চল জামায়াতে ইসলামীর জোন বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য মাওলানা মশিউর রহমান এবং মাস্টার শফিকুল আলম, খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হোসাইন, সাতক্ষীরা জেলা আমির মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, বাগেরহাট জেলা আমির মাওলানা রেজাউল করিম, খুলনা মহানগরী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান এবং বাগেরহাট জেলা সেক্রেটারি ইউনুস আলী।

মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক আরও বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ঝড়ে আওয়ামী লীগ অপশক্তিকে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। বাংলাদেশ শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ। এখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানরাও আছে। তারা আলাদা কোনো নাগরিক নয়, তারাও বাংলাদেশের নাগরিক। এখানে তারাও জন্ম নিয়েছেন। আমরা মুসলমানরা তাদের সমান অধিকার দিয়ে সম্মিলিতভাবে মিলেমিশে এ দেশে বসবাস করতে চাই। আমরা কারও দাদাগিরিকে মেনে নেব না। কারও পরিকল্পনা আমরা এখানে বাস্তবায়ন হতে দেব না।

তিনি বলেন, জামায়াত একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি কোনো গতানুগতিক রাজনৈতিক দল নয়, বরং যোগ্য ও আদর্শবাদী মানুষ গড়ার আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়।

তিনি আরও বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার গত দেড় যুগ ধরে বিরোধী মতের লাখ লাখ মানুষের ওপর হত্যা, গুম, জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। এ জুলুমের সবচেয়ে বড় শিকার হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। স্বৈর শাসনামলে দেশের মানুষের ভোটাধিকার, মৌলিক নাগরিক অধিকার, বিরোধীমতের সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং করার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী সরকার দেশের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা আশা করি অন্তবর্তীকালীন সরকার যৌক্তিক সময়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের সংস্কার সম্পন্ন করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।

শেয়ার করুন: