বরিশাল মেডিকেলের হলে দুই ছাত্রীকে র্যাগিংয়ের ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের হলে দুই ছাত্রীকে র্যাগিংয়ের ঘটনায় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে হলের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটিও বিলুপ্ত করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে তদন্ত কমিটি গঠন ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।
আজ রোববার দুপুরে কলেজের উপাধ্যক্ষ নাজিমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, হলের কমিটি বাতিল করা হয়েছে এবং র্যাগিংয়ের ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে কমিটির আরও সময় লাগলে তা নিতে পারবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে কলেজের অধ্যাপক উত্তম কুমার সাহাকে। বাকি তিন সদস্য হলেন সহযোগী অধ্যাপক প্রবীর কুমার সাহা, প্রভাষক অনিকা বিশ্বাস ও জহিরুল ইসলাম।
গত বুধবার রাতে ছাত্রী হলের ৬০৬ নম্বর কক্ষে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। হলে অবস্থান করা ডেন্টাল ৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাহমিদা রওশন ওরফে প্রভা, ৫০তম ব্যাচের নীলিমা হোসেন ওরফে জুঁইয়ের নেতৃত্বে র্যাগিং করা হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়। তাঁরা নিজেদের ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে সেখানে সংগঠনটির কোনো কমিটি নেই। নির্যাতনের একপর্যায়ে এক ছাত্রী অচেতন হয়ে পড়লে তাঁকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এরপর তিনি সুস্থ হয়ে শনিবার আবার হলে ফিরে আসেন।
অভিযোগে বিষয়ে ফাহমিদা রওশন শনিবার রাতে প্রথম আলোক বলেন, ওই ছাত্রীর সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করা হয়নি। রুমমেটের সঙ্গে ঝামেলা হওয়ায় বিষয়টি তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁকে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে র্যাগিংয়ের ঘটনা জানাজানি হলে শনিবার দুপুরে সাংবাদিকেরা সংবাদ সংগ্রহ করতে মেডিকেল কলেজে যান। ভুক্তভোগী ছাত্রীর বক্তব্য নেওয়ার সময় কলেজের দুজন শিক্ষকের নেতৃত্বে কয়েকজন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় একটি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার পর বেলা দেড়টার দিকে পুলিশের মধ্যস্থতায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ও সাংবাদিক নেতারা আলোচনায় বসেন। সেখানে হামলাকারী দুই চিকিৎসক সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চান।
কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার বলেন, ভুল–বোঝাবুঝি থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছিল। উভয় পক্ষ বসে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে।
বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক তিনি কলেজ যান এবং এর প্রতিবাদ করেন। পরে কলেজ প্রশাসন এ নিয়ে বৈঠক করে দুঃখপ্রকাশ করার পর বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে।
বরিশাল প্রতিনিধি