July 11, 2025
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

প্রধান বিচারপতি নিয়োগসংক্রান্ত দুই বিষয়ে দলগুলো ঐকমত্য: আলী রীয়াজ

দেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগসংক্রান্ত দুটি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয় পর্যায়ের ১১ম দিনের আলোচনা শেষে এ কথা বলেন তিনি।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো আজ যে দুটি বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন সেগুলো হলো- সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবর্তন করা এবং রাষ্ট্রপতির আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা। বিদ্যমান সংবিধানে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

তবে, প্রধান বিচারপতি হিসেবে কর্মে নিযুক্ত জ্যেষ্ঠতম একজনকে না কর্মে জ্যেষ্ঠ দুইজনের মধ্যে একজন নিয়োগ করা হবে সেই বিষয়ে দুটি মত উপস্থিত আছে। কমিশন এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে বলেছে আরেকটু বিবেচনা করে সুনির্দিষ্ট মতামত দেওয়ার জন্য। আশাকরি পরবর্তী আলোচনায় এ বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছে যাবো।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে আলোচনা বিষয় তুলে আলী রীয়াজ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলো যে প্রস্তাব দিয়েছে তা ক্ষাণিকটা অগ্রগতি হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক প্রধানকে নিয়োগ করার ক্ষেত্রে আইনসভার মধ্য থেকে প্রস্তাব করা বা নিয়োগের ব্যবস্থা করা এটাই জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

আজকে এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মতামত পাওয়া গিয়েছে। এ মতামতের ভিত্তিতে আরও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব মতামত টেবিলে আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত আছে। প্রত্যকটি রাজনৈতিক দল চায় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা এমন হোক যা ত্রুটিহীন হয়। দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামের যাতে প্রতিফলন হয়। ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিতর্কের মধ্য না পড়ে।

জরুরি অবস্থা ঘোষণা সংক্রান্ত আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, জরুরি অবস্থার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো দুটি বিষয়ে একমত হয়েছে। সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদের ‘ক’ জরুরি অবস্থা ঘোষণার যে বিধান রয়েছে তা সংশোধন করতে হবে। জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়টি যেন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না হয়। এ বিষয়গুলো আরও সুস্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে রাজনৈতিক দলগুলো।

একারণে এ বিষয়ে আরও সুস্পষ্ট করা যায় আর বিভিন্ন বিষয় সংযুক্ত করা যায় তা আলোচনা চলছে। যেমন অভ্যন্তরীণ গোলযোগ কথাটি আছে এখন এটি না রাখার বিষয়ে রাজনৈতিকদলগুলো একমত হয়েছে। তারা এটাও বিবেচনা করছেন বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ অন্যকারণে জরুরি অবস্থার বিধান কেমন হতে পারে কীভাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হলে অন্য ব্যস্থাপনা গুলো কার্যকর করা যায় এবং কীভাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হবে।

এখন বিদ্যমান ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী প্রতির স্বাক্ষরে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব। ঐকমত্য কমিশন সেগুলো বিবেচনা করছে। কমিশন থেকে মন্ত্রিসভার অনুমতি নিয়ে বিধানযুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। কোনো কোনো রাজনৈতিকদল বলেছে সংসদের কোন কমিটি থেকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। এগুলো আলোচনা চলছে। আগামী সপ্তাহে এ আলোচনাগুলো আরও সুস্পষ্টভাবে জরুরি অবস্থা বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারবো।

আলী রীয়াজের আশা ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। যার থেকে আমরা আশাবাদী এ মাসের মধ্য একটি সনদ তৈরি করতে পারবো। প্রতিদিনই আমরা বেশ অগ্রগতি হচ্ছি। এগুলো তাড়াহুড়োর বিষয় নয়- ক্ষেত্রে বিশেষ শব্দ বাক্য বিবেচ্য হচ্ছে। সেগুলো বিবেচনা করেই অগ্রসর হচ্ছি। রাজনৈতিক দলগুলো খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে আলোচনা করে অগ্রসর হচ্ছে। পরস্পর পরস্পরের মতামত শ্রদ্ধা করছেন।

শেয়ার করুন: