April 30, 2025
আন্তর্জাতিক

পোপের প্রয়াণের পর ভ্যাটিকানের নেতৃত্বে যিনি

ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুবার্তা বিশ্বের সামনে সর্বপ্রথম তুলে ধরেন কার্ডিনাল কেভিন ফ্যারেল। সোমবার (২১ এপ্রিল) তিনি এ ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই ভ্যাটিকানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান হিসেবে ‘ক্যামেরলেনগো’র দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

আইরিশ-আমেরিকান এই ধর্মযাজক দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে আসছেন। সাধারণত পোপের নিকটতম পরামর্শকদের মধ্যে কার্ডিনালরা থাকেন। বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ পরিচালনায় তারা পোপকে সহায়তা করেন। খবর বিবিসির।

কার্ডিনাল ফ্যারেল বলেন, “পোপ তার প্রভুর ঘরে ফিরে গেছেন।” এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিনি ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে প্রবেশ করেন। পোপ ফ্রান্সিস ২০১৯ সালে তাকে ক্যামেরলেনগো হিসেবে মনোনীত করেছিলেন। এই পদে নিযুক্ত ব্যক্তি পোপের মৃত্যু কিংবা পদত্যাগের পরবর্তী সময়কালে—যাকে ‘অ্যাপোস্টোলিকা সেডেস ভ্যাকান্স’ বলা হয়—সম্পূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন।

শুধু প্রশাসনিকই নয়, পোপ ফ্রান্সিসের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রথাগত আচার-অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বও তার ওপর বর্তেছে। শত শত বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এই দায়িত্ব পালন করবেন কার্ডিনাল ফ্যারেল।

১৯৪৭ সালে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে জন্ম নেওয়া কেভিন ফ্যারেল পড়াশোনা করেন স্পেনের ইউনিভার্সিটি অব সালামাঙ্কা ও রোমের পন্টিফিক্যাল গ্রেগরিয়ান ইউনিভার্সিটিতে। কর্মজীবনে তিনি মেক্সিকোতে ইউনিভার্সিটি অব মন্টেরে-তে চ্যাপলেইন হিসেবে কাজ করেছেন, আবার যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড রাজ্যের বেথেসডা শহরের একটি প্যারিশেও দায়িত্ব পালন করেন।

৭৭ বছর বয়সী ফ্যারেল তার জীবনের ৩০ বছরেরও বেশি সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গির্জায় কাজ করে কাটিয়েছেন। ২০০৭ সালে তিনি ডালাসের বিশপ হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৬ সালে পোপ ফ্রান্সিস তাকে ভ্যাটিকানের প্যাস্টোরাল কেয়ার বিষয়ক একটি নতুন বিভাগের দায়িত্ব দেন এবং একইসঙ্গে কার্ডিনাল পদে উন্নীত করেন।

এরপর ২০২৩ সালে কেভিন ফ্যারেলকে ভ্যাটিকান সিটি স্টেটের সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট এবং ‘কমিশন ফর কনফিডেনশিয়াল ম্যাটারস’-এর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বর্তমানে ক্যামেরলেনগো হিসেবে তার প্রধান দায়িত্ব—পরবর্তী পোপ নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা। যদিও এই পদ থেকে পোপ নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা বিরল, তবে অতীতে এমন নজির রয়েছে মাত্র দু’বার। ১৮৭৮ সালে গিওআচিনো পেচি (পোপ লিও ১৩) এবং ১৯৩৯ সালে ইউগেনিও পাচেলি (পোপ পায়াস ১২) ক্যামেরলেনগো থেকে পোপ নির্বাচিত হন।

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক সনদে স্বাক্ষর করবেন কার্ডিনাল ফ্যারেল এবং তিনিই মরদেহ কফিনে শায়িত করবেন। ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয় সময় বুধবার সকালে শোকযাত্রার মাধ্যমে পোপের মরদেহ ডোমাস সান্তা মার্তা চ্যাপেল থেকে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় নিয়ে যাওয়া হবে। এই শোকযাত্রার নেতৃত্বও দেবেন কার্ডিনাল কেভিন ফ্যারেল।

শেয়ার করুন: