পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের
বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলপথ পানামা খাল ব্যবহারের জন্য মধ্য-আমেরিকার দেশ পানামা অতিরিক্ত ফি আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত-প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি মার্কিন মিত্র পানামার কাছ থেকে খালটির নিয়ন্ত্রণভার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। শনিবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে দেওয়া এক পোস্টে এই হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
মার্কিন এই নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বলেছেন, পানামা যদি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে খালটি পরিচালনা না করে, তাহলে এর নিয়ন্ত্রণভার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের জন্য পানামার কাছে দাবি জানাবেন তিনি।
ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে পানামা খাল ঘিরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। পানামা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ভুল হাতে এই খালটি পড়তে দেবেন না। পানামা খালে পণ্যবাহী জাহাজ পরিচালনায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এই খালের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পানামার; চীন বা অন্য কারও নয়। আমরা কখনই এর নিয়ন্ত্রণ ভুল কারও হাতে যেতে দেব না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি একটি সার্বভৌম দেশকে পানামা খাল হস্তান্তর করার জন্য চাপ দিতে পারেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, ট্রাম্পের অধীনে মার্কিন কূটনীতিতে প্রত্যাশিত পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে ট্রাম্পের এই হুমকিতে; যিনি ঐতিহাসিকভাবে মিত্রদের হুমকি ও প্রতিপক্ষের সঙ্গে কাজ করার সময় মারমুখী অবস্থান নিয়ে থাকেন।
আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে সংযোগকারী পানামা খাল বিশ্ব বাণিজ্যে মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক দশক ধরে খালটি ও এর প্রশাসনিক অঞ্চল নির্মাণ করে যুক্তরাষ্ট্র। ১৯১৪ সালে পানামা খালের নির্মাণকাজ শেষ হলেও দুই দেশের যৌথ প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে সেটি পরিচালনা করে। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে এই খালের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে মধ্য আমেরিকার দেশ পানামা।
ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘পানামা যে ফি নিচ্ছে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পানামাকে যে অসাধারণ উদারতা দেখিয়েছে তা হাস্যকর।’’
তিনি বলেছেন, এই খালটি অন্যদের সুবিধার জন্য পানামাকে দেওয়া হয়নি। কেবল আমাদের সঙ্গে পানামার সহযোগিতার স্মারক হিসাবে এটি দেওয়া হয়েছিল। যদি খালটির নিয়ন্ত্রণ পানামাকে দেওয়ার এই মহৎ দৃষ্টিভঙ্গির নীতিগুলো নৈতিক এবং আইনি উপায় অনুসরণ না করে, তাহলে আমরা পানামা খাল সম্পূর্ণরূপে এবং প্রশ্নাতীতভাবেই আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাবো।
বৈশ্বিক নৌপরিবহনের প্রায় পাঁচ শতাংশই হয়ে থাকে পানামা খাল দিয়ে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া এই খালের প্রধান ব্যবহারকারী। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পানামার দূতাবাস এই বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।