নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ প্রোগ্রাম করার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেবো: ডিএমপি কমিশনার
ফেব্রুয়ারিতে নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কোনো ধরনের প্রোগ্রাম করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) অমর একুশে বইমেলা ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ডিএমপির নেওয়া নিরাপত্তা পরিকল্পনা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
বইমেলা ঘিরে বিগত সরকারের আমলে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। পরে এসব ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তারা এখন কারামুক্ত। তাদের বিষয়ে কোনো নজরদারি থাকবে কি না- জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এরকম যারা সন্দেহভাজন আছেন আমরা তাদের নজরদারিতে রাখছি।
প্রতিবছর বইমেলায় কিছু লেখক বা প্রকাশনী উসকানিমূলক কিছু বই প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে ডিএমপির কোনো নজরদারি রয়েছে কি না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কয়েকটি সমন্বয় সভা করেছি। বাংলা একাডেমির কর্মকর্তাদের আমরা বলেছি, যেন কোনো ধরনের উসকানিমূলক বই মেলায় না আসে। তারা যেন বই স্ক্যানিং করে মেলায় পাঠায়।
ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামী লীগ বেশ কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলটির ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগ এখন নিষিদ্ধ। আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘিরে কী ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, এ প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা এ বিষয়ে সবসময় কাজ করছি। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন প্রোগ্রাম আসছে। আমরা এসব প্রোগ্রাম প্রতিহত করছি। প্রোগ্রাম তো দিতেই পারে, কিন্তু সেগুলো আমরা প্রতিদিনই মোকাবিলা করছি।
তিনি বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের অনেক নেতাকে আমরা গ্রেফতার করেছি। তারা যদি কোনো প্রোগ্রাম করার প্রদক্ষেপ নেয় তাহলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো। আমাদের দৃষ্টিতে কোনো আশঙ্কা দেখি না।
ঢাকা মহানগরীতে যে যেভাবে পারছে আন্দোলন করছে। এর ফলে মহানগরীতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এখন আবার বইমেলা শুরু হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে পুলিশ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কীভাবে করবে, জানতে চাইলে ঢাকার পুলিশপ্রধান বলেন, ঢাকা শহরের ট্রাফিক অবস্থা খুবই নাজুক। মানুষ খুবই কষ্ট করছে। আমার নিজেরও কষ্ট লাগে। কারণ এই শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা তো আমিও দেখি। যখন দেখি মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় আটকে থাকে, ছোট একটা দাবি নিয়ে ২০ জন লোক রাস্তা আটকে দেয়, তখন খারাপ লাগে।
‘আমি তাদের বলবো আপনারা ছোট দাবি নিয়ে রাস্তা আটকায়েন না। আপনারা ফুটপাতে অবস্থান করুন। কিন্তু খুবই দুঃখজনক যেকোনো দাবি দেওয়ার মোক্ষম স্থল হয়ে গেছে রাস্তা অবরোধ। উত্তরা থেকে রওনা দিয়ে মতিঝিল যেতে ৭ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে, ভয়ঙ্কর অবস্থা।’
তিনি বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আমরা আমাদের পেশাগত পরিবর্তন করেছি। আমি এবং আমাদের আইজিপি আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। আমরা বলছি আমরা কাউকে মারতে চাই না এবং আমরাও মরতে চাই না। আমি কোনো ব্রিটিশ পুলিশ না। আমি ব্রিটিশ পুলিশের কমিশনার না। রাস্তার মধ্যে আমার লোককে আমি লাঠি দিয়ে পেটাতে চাই না। সাত কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের মধ্যে যখন সমস্যা হচ্ছিল তখন আমি আমার সহকর্মীদের বলেছি যেন কোনো লাঠিচার্জ না করা হয়।
শিক্ষার্থীদের ঘটনার সময় লাঠিচার্জ করতে আপনি নিষেধ করেছেন, কিন্তু শাহবাগে ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের ওপর কেন লাঠিচার্জ করা হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখানে লাঠিচার্জ করিনি, শুধু জলকামান দেওয়া হয়েছে।
অনেকে আশঙ্কা করছেন বইমেলায় ‘মব’ হতে পারে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, না; এমন কিছু হবে না। ব্যবস্থা নিয়েছি, এমন কিছুই হবে না।
ঢাকা শহরে রাতে বের হওয়া অনিরাপদ, এ বিষয়ে আপনি কমিশনার হিসেবে কী মনে করছেন, সাংবাদিকদের কাছে আমার অনুরোধ এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করবেন না যেন জনগণের মনে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়। আমরা আমাদের মেকানিজমে ঢাকা শহরকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা করি। অনেক মানুষের শহর ঢাকা।
ঢাকায় যে ছোটখাটো আন্দোলনগুলো হচ্ছে এর সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, না, এরকম কিছু নেই। আমরা এখনো এমন তথ্য পাইনি।