নিজ্জর হত্যায় জড়িত কে এই লরেন্স বিষ্ণোই?
কানাডার পুলিশ তাদের এক তদন্ত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে কানাডায় ২০২৩ সালে শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারতের বহুল আলোচিত লরেন্স বিষ্ণোইয়ের গ্যাং জড়িত।
গতকাল (১৬ অক্টোবর) রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) দাবি করে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর পরিকল্পনায় ‘বিষ্ণোই গ্যাং’ নিজ্জরকে হত্যা করেছিল।
ভারতের কুখ্যাত এই গ্যাংয়ের নেতা লরেন্স বিষ্ণোই বর্তমানে গুজরাটের আহমেদাবাদের সবরমতি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
২০২২ সালে লরেন্স বিষ্ণোই প্রথমবারের মত আলোচনায় আসেন ওই বছরের ২৯ মে পাঞ্জাবের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সদস্য সিধু মুসওয়ালাকে হত্যার দায় স্বীকার করে। সেই থেকে শুরু, গত শনিবার রাতে মুম্বাইয়ের অভিজাত এলাকা বান্দ্রায় ৬৬ বয়সী রাজনীতিবিদ ও রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী বাবা সিদ্দিককে গুলি করে হত্যার দায়ও স্বীকার করেছে বিষ্ণোই গ্যাং।
বিষ্ণোইয়ের এক সহযোগী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে সিদ্দিককে হত্যার দায় স্বীকার করে লিখেন, কারও সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। কিন্তু সালমান খানকে যেই সহায়তা করে তার প্রসঙ্গ ভিন্ন।
বাবা সিদ্দিকের সঙ্গে বলিউড তারকাদের সখ্য ছিল বিশেষ করে সালমান খানের সঙ্গে।
১৯৯৮ সালে রাজস্থানে একটি চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে ফাঁকে শিকারে বেরিয়ে দুটি বিরল প্রজাতির কালো হরিণ শিকার করেছিলেন সালমান। বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে এই প্রজাতির হরিণকে অত্যন্ত পবিত্র। সেই থেকে বিষ্ণোইয়ের সঙ্গে সালমান খানের দ্বন্দ্ব।
লরেন্স বিষ্ণোইয়ের জন্ম ১৯৯৩ সালে, পাঞ্জাবে। উচ্চ মাধ্যমিক শেষে আইন নিয়ে পড়ার জন্য পাঞ্জাবের রাজধানী চণ্ডীগড় যান লরেন্স। কলেজে পড়ার সময়
জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। লরেন্স কলেজটির শিক্ষার্থীদের সংগঠনের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও পালন করেন। মূলত ওই সময়ে অপরাধজগতে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
অগ্নিসংযোগ ও খুনের একটি মামলায় লরেন্সকে কারাগারে যেতে হয়েছিল। কারাগারে অন্যান্য গ্যাং নেতাদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা লরেন্সের মনোজগতে প্রভাব বিস্তার করে।
সিধু মুসওয়ালার হত্যাকাণ্ড নিয়ে লেখা বই ‘হু কিলড মুসওয়ালা?’র লেখক জুপিন্দরজিৎ সিং আল–জাজিরাকে বলেন, কানাডায় শিখ নেতাকে হত্যা করার সঙ্গে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের যুক্ত থাকার বিষয়ে কানাডা সরকারের দাবি ইতিমধ্যে তাদের ব্র্যান্ডমূল্য বাড়িয়েছে। এতে লরেন্সেরই জয় হয়েছে। যে ‘খ্যাতি’ তিনি চেয়েছিলেন, তিনি তা পাচ্ছেন। লরেন্সের মতো মানুষেরা বন্দুক নিয়ে বাঁচেন, মরেনও বন্দুক নিয়ে।