নাটোরে ধর্ষণের ১৬ বছর পর আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নাটোরে ১৬ বছর আগের ধর্ষণের মামলায় আতাউর রহমান (৫১) নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (দায়রা জজ) মুহাম্মদ আবদুর রহিম এই দণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আতাউর রহমানের বাড়ি নাটোরের লালপুর সদর ইউনিয়নে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে ছিলেন না।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী সূত্রে জানা গেছে, লালপুর থানার একটি ধর্ষণ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ছিল গত রোববার। জামিনে মুক্ত থাকা মামলার একমাত্র আসামি আতাউর রহমান সেদিন আদালতে হাজির না হওয়ায় তাঁর জামিন বাতিল হয়। আজ ছিল মামলাটির রায় ঘোষণার দিন। আজও ওই আসামি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে আদালত রায় ঘোষণা করেন। আদালত ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে আসামি আতাউর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে জরিমানার টাকা আদায় করে ভুক্তভোগী নারীকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে আসামির বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেওয়া হয়। যে দিন থেকে আসামি গ্রেপ্তার হবেন, সেই দিন থেকে অথবা আসামি যে দিন আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন, সেদিন থেকে রায় কার্যকর হবে। আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাইফুল ইসলাম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতের নথি পর্যালোচনা করে জানা যায়, মামলার বাদী নিজেই ভুক্তভোগী নারী। ২০০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে বাড়িসংলগ্ন একটি জমিতে গেলে আসামি আতাউর রহমান তাঁকে ধর্ষণ করেন। তিনি চিৎকার দিতে চাইলে আসামি সঙ্গে থাকা হাঁসুয়া দিয়ে তাঁকে হত্যার হুমকি দেন। পরে বাড়ি ফিরে এসে তিনি ঘটনাটি তাঁর স্বামী ও আত্মীয়-স্বজনদের জানান। তিন দিন পর তিনি লালপুর থানায় নিজেই বাদী হয়ে মামলা করেন। তদন্ত শেষে লালপুর থানার উপপরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক খান ২০০৭ সালের ৩০ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এরপর দীর্ঘ সময়ে ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আজ রায় ঘোষণা করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি আনিছুর রহমান বলেন, ঘটনাটি ১৬ বছর আগের। অভিযোগপত্র যথা সময়ে পাওয়া গেছে। কিন্তু সাক্ষীরা আদালতে আসতে দেরি করায় রায় ঘোষণা করতে দেরি হয়েছে। তবে সাক্ষ্য প্রমাণে দোষী সাব্যস্ত করে বাদীকে ন্যায় বিচার দিয়েছেন আদালত।