November 23, 2024
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর হচ্ছে সরকার

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
রোজার আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি দাম নেওয়া ঠেকাতে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ‘অ্যাকশনে’ নামার ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বুধবার সচিবালয়ে নিত্যপণ্যের মজুদ, সরবরাহ, আমদানি ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠকে তিনি গণমাধ্যমকে একথা পচার করতে বলেন। টিপু মুনশি বলেন, মিডিয়া যেন প্রচার করে যে, দ্রব্যমূল্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে সরকার। কেউ দাম বাড়ালে আমরা অ্যাকশনে যাচ্ছি।
সম্প্রতি অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ ভোক্তাদের নাভিঃশ্বাস উঠেছে। কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে এই পরিস্থিতি হলেও মজুদদারি ও অতিমুনাফার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে অতিমুনাফার অভিযোগে জরিমানা করতে দেখা গেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিকবাজারে দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে যেই দাম আমরা ঠিক করে দিই, সেটা যেন মানা হয়। রিসেন্টলি দেখেছি যে সেখানে কিছু গরমিল দেখা যাচ্ছে। ভোক্তা অধিকার, প্রতিযোগিতা কমিশন এবং গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা করেছি। কোথাও কোথাও দাম বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
বৈঠকে কেবল সয়াবিন তেল ও পাম তেলের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল প্রতিলিটার ১৪৩ টাকা এবং পাম তেল প্রতিলিটার ১৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে গত ৬ ফেব্রুয়ারি। তবে বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে লিটার ১৬০ টাকা থেকে ১৬৭ টাকায়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন বিভিন্ন সূচকের ভিত্তিতে সেটা ঠিক করে। আমাদের ল্যান্ডিং কস্ট কত, বোতলের দাম কত, প্রফিট কতো হওয়া উচিত এগুলো আমরা ঠিক করে দেই। যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেটা মানতে হবে। কোনোভাবেই কোনো ম্যালপ্রাক্টিসকে গ্রহণ করা যাবে না। ডিজিএফআই, এনএসআই ও পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ কাজ শুরু করেছে। কোনো কালো হাত যাতে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে।
ব্যবসায়ী টিপু মুনশি একইসঙ্গে বলেন, সব ব্যবসায়ী অসাধু নয়, আমাদের কথা হচ্ছে যেসব অনিয়মের কথা শুনেছি, এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। এটা আজকে ভোক্তা অধিকার, ডিজিএফআই, এনএসআই, প্রতিযোগিতা কমিশনের প্রতিনিধিদের বলে দিয়েছি। সরকারের চেয়ে বড় হাত কারও নেই। আমরা ব্যবসায়ীদের সব রকম সুবিধা দিতে চাই, তাই বলে এমন না যে তারা সুযোগ নেবে। মাঝখানে তেল মিল মালিকরা এসেছিল দাম বাড়াতে, আমরা পরিষ্কার বলে দিয়েছি যে, নট পসিবল। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ‘জনগণের সিন্ডিকেট’ গড়ে তুলতে সংবাদ মাধ্যমকে বূমিকা রাখার আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
অদূর ভবিষ্যতে সব ধরনের ভোজ্যতেল বোতলজাত করে বিক্রি করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ৩১ মে থেকে বোতলজাত ছাড়া কোনো খোলা সয়াবিন তেল এবং ৩১ ডিসেম্বরের পর থেকে বোতলজাত ছাড়া কোনো সুপার পাম তেল বাজারে ছাড়তে দেওয়া হবেনা বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কেউ কেউ বোতল কেটে তেল খোলা বাজারে বিক্রি করছে। মধ্যস্বত্বভোগীরা তেল মজুদ করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এগুলো আমরা শুনেছি। এসবের বিরুদ্ধেই শক্ত নির্দেশনা দিয়েছি। চিনির ক্ষেত্রে যেই শুল্ক সুবিধা দেওয়া আছে, সেটা ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছিল। এনবিআর এই সুবিধা অব্যাহত রেখেছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ, এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিনসহ সরকারি সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *