দেশ চরম ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়ে, এই ক্রান্তিলগ্ন জাতির অস্তিত্বের: মির্জা ফখরুল
বিএনপির সমাবেশের সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে ‘অদৃশ্য জায়গা’ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি দাবি করেন, গত বুধবার আওয়ামী লীগের সমাবেশে ৫০ হাজার লোকও হয়নি। বিএনপির সমাবেশে লাখ লাখ লোক স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসেছেন। কিন্তু অদৃশ্য জায়গা থেকে মিডিয়াকে বলা হলো, দুই দল সমান মনে হয়, এমনভাবে নিউজ করতে।
আজ শনিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের এক দফা দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।
দেশ চরম ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়ে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এই ক্রান্তিলগ্ন জাতির অস্তিত্বের। জাতি হিসেবে স্বকীয়তা রক্ষার। বেআইনিভাবে, সংবিধান লঙ্ঘন করে ও রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে অবৈধভাবে সরকার ক্ষমতা দখল করে আছে। সচেতনভাবে ও সুপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। জনগণকে কীভাবে বোকা বানিয়ে সব নিয়ে নেওয়া যায়, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ আওয়ামী লীগ।
সরকার জনগণকে উন্নয়নের বায়োস্কোপ দেখাচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার জাতিকে উন্নয়নের বিভ্রম দেখাচ্ছে। বায়োস্কোপে যেমন দেখায়, সেভাবে টানেল, ফ্লাইওভার, ভবন দেখাচ্ছে। অথচ সাধারণ মানুষের ঘরে ছাদ নেই। দেশের এমন উন্নয়ন হয়েছে, যার ওপরে টাই, কিন্তু পায়ে জুতা নেই।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১২ জুলাই আওয়ামী লীগ যে সমাবেশ করল, তাতে ৫০ হাজার লোকও হয়নি। বিএনপির সমাবেশে লাখো লাখো মানুষ। অথচ অদৃশ্য জায়গা থেকে গণমাধ্যমকে বলা হলো, যেন এমনভাবে নিউজ করে, যাতে দুই দলকে সমান দেখায়। টেলিভিশনে লাইভও করতে দেওয়া হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনের আর নির্বাচন হবে না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সামনে আর পথ খোলা নেই। কোন দেশের ভিসা নীতিতে কী আছে, না আছে, দেখতে চাই না। জনগণের শক্তিতে আন্দোলন করছি।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে সচল কোনো সংবিধান নেই। দেশ চলছে দখলদারদের মাধ্যমে। দেশ দখলদারমুক্ত করতেই এক দফা দেওয়া হয়েছে।
বিএসপিপির আহ্বায়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, অতীতে আলোচনার অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো নয়। এবার বর্তমান সরকারের পদত্যাগের আগে কোনো আলোচনা নয়।
বিএসপিপির সদস্যসচিব কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক সদরুল আমিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল লতিফ, আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী, এম এ আজিজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ শেষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত নীরব পদযাত্রা করেন পেশাজীবীরা।