দেশে করোনায় ১২ দিনে শনাক্ত আরও এক লাখ
# একদিনে আক্রান্তের দেড় গুণ বেশি সুস্থ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ওমিক্রনের দাপটে ১২ দিনে দেশে কোভিড রোগীর সংখ্যা এক লাখ বেড়েছে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় যত রোগী শনাক্ত হয়েছে, তার দেড় গুণ বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছে। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ২৩ জন রোগী শনাক্তের খবর দেওয়া হয়। তাদের নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ৪ হাজার ৮২৬।
মহামারীর দুই বছরগড়িয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি রোগীর সংখ্যা ১৮ লাখ পেরিয়েছিল। তার ১২ দিন পর আরও এক লাখ রোগী যোগ হল। সরকারি হিসাবে এই সময়ে সেরে উঠেছেন ৮ হাজার ৮২১ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠলেন ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮০২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২০ জন কোভিড রোগীর। তাদের নিয়ে মহামারীতে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৭৯১। সরকারি হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ১১ হাজার ২৩৩ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। তবে উপসর্গবিহীন রোগীরা আক্রান্তরা এই হিসাবে আসেনি।
করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশর ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে। এরপর আসে আরেক নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, নতুন বছরের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকে সংক্রমণ। এক পর্যায়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার ২৮ জানুয়ারি পৌঁছায় ৩৩ শতাংশের রেকর্ড উচ্চতায়।
এরপর সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে, ৪ ফেব্রুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে আসে ১০ হাজারের নিচে। সাত দিনের মাথায় শুক্রবার তা ৬ হাজারের নিচে নামে। শনিবারও ছিল একই ধারা। গত বুধবার শনাক্ত রোগীর হার কমে ১৮ দশমিক ৮৩ শতাংশে নেমেছিল। শুক্রবার তা আরও কমে ১৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ হয়েছিল। তবে শনিবার এই হার আবার বেড়ে ১৬ দশমিক ৫০ শতাংশ হয়েছে।
মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫১ শতাংশ। গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৩ হাজার ৮৯৪ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৭৭ শতাংশের বেশি। যে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ এবং আটজন নারী। তাদের মধ্যে ১৩ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এছাড়া রাজশাহী বিভাগের দুইজন, খুলনা বিভাগের দুইজন এবং বরিশাল, সিলেট ও রংপুর বিভাগের একজন করে মোট তিনজন বাসিন্দা ছিলেন। তাদের ১৩ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, তিনজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, একজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, দুইজনের বয়স ছিল ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ আগস্ট ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা। বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৮ লাখেরও বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪০ কোটি ৮২ লাখ।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়