দেশের পথে ড. ইউনূস
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য দেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে (বাংলাদেশ সময়) দুবাইগামী একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। সেখানে যাত্রাবিরতি শেষে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হবেন।
ইউনূস সেন্টার থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে দেশে ফিরবেন ড. ইউনূস। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দুপুরে তার ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
সূত্র জানায়, অলিম্পিক কমিটির আমন্ত্রণে বিশেষ অতিথি হিসেবে প্যারিসে গিয়েছিলেন ড. ইউনূস। সেখানে তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন, তার একটি ছোট অস্ত্রোপচার হয়েছে। সেই কারণে তার ফিরতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।
এদিকে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চূড়ান্ত রূপরেখা আজ রাতের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, আজ বুধবার রাতের মধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চূড়ান্ত রূপরেখা ঘোষণা করা হবে।
এর আগে গতকাল রাষ্ট্রপতির সাথে তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তিন বাহিনী প্রধান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বৈঠকের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বঙ্গভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব করা হয়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাদের প্রস্তাবের সাথে একমত পোষণ করেন।
পরদিন বুধবার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেশবাসীর উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন নোবেল জয়ী ড. ইউনূস। তিনি বলেন, আসুন আমরা আমাদের এই নতুন বিজয়ের সর্বোত্তম সদ্ব্যব্যবহার নিশ্চিত করি। কোনো প্রকার ভুলের কারণে আমাদের এই বিজয় যেন হাতছাড়া হয়ে না যায়। আমি সবাইকে বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্ত থাকতে এবং সব ধরনের সহিংসা এবং স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানাচ্ছি। ছাত্র ও দলমত নির্বিশেষে সবাইকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এক পর্যায়ে এক দফায় রূপ নেয় এবং গত সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন।
অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠনের উদাহরণ বাংলাদেশে আগেও রয়েছে। ১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পর বিচারপতি শাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হয়েছিল। ২০০৭ সালে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছিল। এবারও তেমনি একটি সরকার হবে, যারা দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ কায়েম করে জাতীয় নির্বাচন দেবে। সেনাবাহিনী এই সরকারকে পেছন থেকে সহায়তা যোগাবে।