দুই প্রবাসী ফুটবলার নিয়ে শিরোপায় চোখ বাংলাদেশের
সিনিয়র জাতীয় ফুটবল দলের মতো বয়স ভিত্তিক দলেও এখন প্রবাসী ফুটবলাররা আসছেন। আগামীকাল সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্ট খেলতে বাংলাদেশ ভারতের অরুণাচল রওনা হচ্ছে। এই স্কোয়াডে দুই জন রয়েছেন প্রবাসী ফুটবলার।
১৫ মে বাংলাদেশ সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টের জন্য আনুষ্ঠানিক ক্যাম্প শুরু করে। ৩৫ জনের প্রাথমিক তালিকায় থাকা ফুটবলারদের মধ্যে ৩১ জন যোগ দেন। এই ক্যাম্পে ৩ জন প্রবাসী ফুটবলার ছিলেন। এদের মধ্যে বাদ পড়েছেন এলমান মতিন। তিনি ইংল্যান্ডের ক্লাবে খেলেন।
বাংলাদেশ দলে জায়গা পেয়েছেন ইতালি প্রবাসী ফুটবলার আব্দুল কাদির ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ফার্জাদ আফতাব। প্রবাসী ফুটবলারদের নিয়ে বাংলাদেশের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, ‘৩১ জন দুই সপ্তাহের বেশি অনুশীলন করেছে। সবাই বাংলাদেশি। পারফরম্যান্সের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত স্কোয়াড গঠন হয়েছে।’
সাফ অনূর্ধ্ব-২০ দলের অধিনায়ক নাজমুল হুদা ফয়সাল বলেন, ‘হামজা ভাই খেলার পর বাংলাদেশ দলের শক্তি বেড়েছে। আশা করি তারাও আমাদের দলের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।’ অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্টে অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী ফুটবলার আরহাম ইসলাম বাংলাদেশ দলে খেলেছিলেন। তিনি সতীর্থদের কাছ থেকে তেমন বলের যোগান পাননি। অনূর্ধ্ব-২০ দলে এমন ঘটনা ঘটে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
বসুন্ধরা কিংস চন্দন ও ইউসুফকে ছাড়েনি। আর বিকেএসপির দুই ফুটবলার তাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছায় ক্যাম্পে যোগ দেননি। বসুন্ধরা কিংসের দুই ফুটবলার ক্যাম্পে যোগ না দেয়ায় দলীয় শক্তিমত্তা খানিকটা হ্রাস পেলেও ছোটন আশাবাদী, ‘তারা আসলে দলের শক্তি বাড়ত। যেহেতু আসেনি ৩১ জন নিয়েই আমরা আজ সকাল পর্যন্ত অনুশীলন করেছি। আজ ২৩ জনের চূড়ান্ত স্কোয়াড করেছি। আমরা আশা করি ভালো ফলাফলের।’
বসুন্ধরা কিংস গত বছরও অনূর্ধ্ব-২০ পর্যায়ে খেলোয়াড় ছাড়েনি। সেই সময় কোচ মারুফুল হকের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিল ক্লাবটি। এবারও সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলোয়াড় ছাড়ে দেশের অন্যতম শীর্ষ ক্লাবটি। আজ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা বাফুফের সহ-সভাপতি ও ডেভলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, ‘জুনিয়র পর্যায়ে ক্লাবের খেলোয়াড় ছাড়ার বিষয়ে বিধির বাধ্যবাধকতা নেই। ক্লাবেরও কিছু প্রায়োরিটি থাকে। খেলোয়াড়দেরও ক্যারিয়ারের বিষয় রয়েছে। আমাদের সকলেরই জাতীয় স্বার্থ অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করা দরকার। এখানে বোধ হয় খানিকটা ঘাটতি রয়েছে। সামনে ক্লাবগুলোর সঙ্গে বসে এই বিষয়ে আলোচনা করব।’
গোলাম রব্বানী ছোটনের নারী বয়স ভিত্তিক পর্যায়ে অনেক সাফল্য রয়েছে। এবারই প্রথম ছেলে দল নিয়ে সাফে যাচ্ছেন। গত বছর বাংলাদেশ সাফ অনূর্ধ্ব-২০ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এ নিয়ে ছোটন বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের প্রত্যাশা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। আমি সব সময় শৃঙ্খলার দিকে নজর দেই। এই ছেলেরা অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ছিল। আমার কাজ করতে কোনো সমস্যা হয়নি।’
কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের অধীনে ২১ দিন অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। দুই সপ্তাহ যশোরের শামসুল হুদা ফুটবল একাডেমিতে অনুশীলনের পর বিকেএসপিতে হয়েছে অনুশীলন। অরুণাচলে সাফের টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে টার্ফের মাঠে। তাই বাংলাদেশ ভারত যাওয়ার আগে বিকেএসপির টার্ফে অনুশীলন করেছে।
বিদেশি নাগরিকদের ভারতের অরুণাচল প্রবেশের জন্য বিশেষ অনুমিতর প্রয়োজন হয়। কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পর অরুণাচলের ইটনার ফ্লাইট ধরার আগে অনলাইনে অরুণাচলে প্রবেশের আবেদন করবে বাংলাদেশ। বাফুফের প্রত্যাশা অল ইন্ডিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের সহায়তায় বাংলাদেশের এই প্রক্রিয়া বেশ সহজেই সম্পন্ন হবে।