দাম কমবে যেসব পণ্যের
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
জনস্বার্থ ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বিভিন্ন ধরনের পণ্যে শুল্ক কর ও ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্য, পোশাক ও ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতির দাম কমতে পারে।
মাংস : প্রস্তাবিত বাজেটে মাংস ও মাংসজাত পণ্যকে নিত্যপণ্যের ক্যাটাগরিতে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব পণ্যের উৎসে অগ্রিম আয়কর ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে মাংসের দাম কমতে পারে।
এলইডি বাল্ব ও সুইচ-সকেট : স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বৈদ্যুতিক এলইডি বাল্ব ও সুইচ সকেট আমদানি করতে শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক ২০-২৫ শতাংশ রয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন অর্থবছরের বাজেটে শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক হার ১০-১৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এলইডি বাল্ব ও সুইচ-সকেটের দাম কমতে পারে।
ই-কমার্সের ডেলিভারি চার্জ : প্রস্তাবিত বাজেটে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়ের ওপর পাঁচ শতাংশ হারে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে তাদের ডেলিভারি চার্জ কমবে।
মিষ্টি : বিপণন পর্যায়ে মিষ্টিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ছিল। এটি কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করায় মিষ্টির দাম কমতে পারে।
কীটনাশক : কৃষিকাজে ব্যবহৃত কীটনাশক, বালাইনাশক ও আগাছানাশকের দাম কমতে পারে। কারণ এসব উৎপাদনে ব্যবহৃত রাসায়নিক আমদানিতে আগাম কর প্রত্যাহার করা হয়েছে।
স্প্রেয়ার মেশিন : কৃষিকাজে ব্যবহৃত রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, ড্রায়ার, স্প্রেয়ার মেশিনে আগাম কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাই এসব পণ্যের দাম কমতে পারে।
হাতে তৈরি বিস্কুট-কেক : হাতে তৈরি বিস্কুটের ভ্যাট অব্যাহতি সীমা প্রতি কেজিতে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২০০ টাকা এবং কেকের ভ্যাট অব্যাহতি সীমা ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করা হয়েছে। এতে হাতে তৈরি বিস্কুট ও কেকের উৎপাদন খরচ কমবে। তবে পার্টি কেকে এই ছাড় নেই।
ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মার ওষুধ : ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মার ওষুধে উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এতে দাম কমতে পারে। ক্যানসার ও ডায়াবেটিসের কিছু ওষুধেও করছাড় দেওয়া হয়েছে বাজেটে।
পশুখাদ্য : পশুখাদ্যের উপকরণ নারকেলের শুষ্ক শাঁসের উচ্ছিষ্ট উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এতে এর উৎপাদন ব্যয় কমতে পারে।
অপটিক্যাল ফাইবার : অপটিক্যাল ফাইবার কেবল উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ২০২৩–২৪ অর্থবছরের বাজেটে। এতে এর দাম কমতে পারে।
উড়োজাহাজ ইজারা : যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত উড়োজাহাজ ইজারার ওপর ভ্যাট ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এতে ইজারার ব্যয় কমবে। সাধারণত বাংলাদেশ বিমান উড়োজাহাজ ইজারা নেয়। বেসরকারি এয়ারলাইন্সও উড়োজাহাজ ইজারা নিয়ে যাত্রী পরিবহন করে। উড়োজাহাজের ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে অগ্রিম কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
কনটেইনার : আমদানি ও রপ্তানিতে ব্যবহৃত কনটেইনার ব্যবসাকে উৎসাহ দিতে চায় সরকার। এ জন্য কনটেইনার আমদানিতে করভার কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আগে যা ধরনভেদে ৩১ ও ৩৭ শতাংশ ছিল।
অন্যান্য : ব্লেন্ডার, জুসার, প্রেশার কুকারের মতো গৃহস্থালি সরঞ্জাম উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা আরও দুই বছর (২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত) বহাল থাকবে। একই সুবিধা পাবে ওয়াশিং মেশিন এবং মাইক্রোওয়েভ ও ইলেকট্রিক ওভেন উৎপাদনকারী কারখানা। তথ্যপ্রযুক্তি ও কম্পিউটার পণ্য উৎপাদনে অব্যাহতি সুবিধা তিন বছর (২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত) বাড়ানো হয়েছে। রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার উৎপাদনে এখনকার ৫ শতাংশের অধিক ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ এক বছর বাড়বে। স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপারের কাঁচামাল আমদানিতেও ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা আরও এক বছর থাকবে। সাবান ও শ্যাম্পুর দুটি কাঁচামালে ৫ শতাংশের অতিরিক্ত ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা এক বছর বহাল রাখা হচ্ছে।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়