তুরস্কের হাতে যাচ্ছে ইউরোপের জ্বালানির নিয়ন্ত্রণ
পশ্চিমা মদদপুষ্ট ইউক্রেন ও অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়ার মধ্যকার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ময়দানে যেন তুরস্কের ভাগ্য লেখা হচ্ছে। এ যুদ্ধ নিয়ে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো প্রকাশ্যে দুই ভাগ হয়ে গেলেও দুই নৌকায় পা দিয়ে দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। সবশেষ রুশ জ্বালানি রপ্তানি থেকেও বিপুল সুবিধা পেতে যাচ্ছে তুরস্ক।
তুর্কি সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহর প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্যাস রপ্তানি নিয়ে ইউরোপিয়ান ভোক্তাদের সতর্ক করেছে রাশিয়া। বলা হচ্ছে, ইউক্রেন যদি রাশিয়ার সঙ্গে গ্যাস ট্রানজিট চুক্তি নবায়ন না করে তবে ইউরোপীয় ভোক্তাদের চড়া মূল্যে গ্যাস কিনতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেনের এ চুক্তি চলতি বছরের শেষ দিন সমাপ্ত হবে।
এদিকে, চলমান যুদ্ধের মধ্যে গ্যাস ট্রানজিট চুক্তি নবায়ন করার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। এমনটা হলে রুশ গ্যাস রপ্তানির অন্যতম ট্রানজিট হয়ে উঠতে পারে তুরস্ক। এমনটা জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। বুধবার (২৮ আগস্ট) নিয়মিত সম্মেলনে পেসকভ জানান, যদি ইউক্রেন চুক্তি বাড়াতে সম্মত না হয় তবে তুরস্কে একটি গ্যাস হাব তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত কার্যক্রম অগ্রগতির দিকে আছে বলেও জানান তিনি।
রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেন বাহিনী ঢুকে পড়ায় হুমকির মুখে পড়েছে রুশ গ্যাস ট্রানজিট। সেখানে গ্যাস ট্রানজিট পয়েন্ট সুডজা অবস্থিত। ফলে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে ইউরোপে গ্যাস রপ্তানি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
পেসকভ জানান, ইউক্রেন যদি নেতিবাচক কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তবে তা ইউরোপীয় ভোক্তাদের জন্য চরম খারাপ খবর ডেকে আনবে। কারণ অন্য বিক্রেতাদের কাছ থেকে জ্বালানি ক্রয়ের জন্য তাদের প্রচুর অর্থ খরচ করত হবে। এমনকি মার্কিন এলএনজি কিনতে চাইলেও তারা সস্তায় তা পাবে না।
২০২২ সালে ইউরোপের হারিয়ে যাওয়া ভোক্তাদের ফিরে পেতে তুরস্কে একটি গ্যাস হাব স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিল রাশিয়া। দীর্ঘদিন ধরে আঙ্কারাও চাইছিল জ্বালানি খাতের অন্যতম বিনিময়কারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে। এ বিষয়ে এখনো রুশ ও তুর্কি কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে বলে জানা যায়। তারা বর্তমানে এ প্রকল্পের রোডম্যাপ নিয়ে কাজ করছেন।