তদন্তের ক্ষেত্রে নাশকতাসহ আমরা কোনো কিছুই উড়িয়ে দেব না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের ক্ষেত্রে নাশকতাসহ আমরা কোনো কিছুই উড়িয়ে দেব না, সবকিছুই আমলে নেব।
রোববার (১৯ অক্টোবর) অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বিমানবন্দরের কার্গো (৮ নম্বর) ভিলেজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, সবকিছু আমলে নিয়েই অনুসন্ধান চালানো হবে। যত ধরনের অভিযোগ আছে, প্রতিটি অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে। একটি ক্যাটালগিং কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা আগুনের পূর্ববর্তী ও বর্তমান অবস্থাসহ পুরো ঘটনার ক্যাটালগিং করবে। পরে গোয়েন্দা সংস্থাসহ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে এর রহস্য উদঘাটন করার চেষ্টা করব।
তিনি বলেন, আমরা সপ্তাহে সাত দিন, ২৪ ঘণ্টা কাজ করব, যেন পণ্য সরবরাহে কোনো রকম জটিলতা না হয়। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ইনস্যুরেন্স কভারেজে কী আছে, বিমানবন্দরে ইনস্যুরেন্স কভারেজ কী আছে—সবকিছু আমলে এনে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
উপদেষ্টা বলেন, শনিবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাত সাড়ে আটটার মধ্যে আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভানো সম্ভব হয়। বর্তমানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে ড্যামেজ অ্যাসেসমেন্টের কাজ চলছে। ধ্বংসের আর্থিক ক্ষতি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের ওজন নির্ধারণের পাশাপাশি খাতভিত্তিক বিশ্লেষণের কাজও করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল রাত ৯টার মধ্যে বিমানবন্দর চালু করা, আমরা তা করতে পেরেছি। অগ্নিকাণ্ডের কারণে প্রায় ২১টি ফ্লাইট ডাইভার্ট ও বাতিল করতে হয়েছিল। যাত্রী সাধারণের কষ্ট লাঘবের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আগামী তিন দিন যেসব নন-শিডিউল ফ্লাইট আসবে, তাদের সব খরচ আমরা মওকুফ করেছি। যাত্রীদের খাবার, থাকা ও সেবার দায়িত্বও আমরা নিয়েছি। তবে একসঙ্গে অনেক বিষয়/চ্যালেঞ্জ সামলাতে হচ্ছে, ফলে কিছু ব্যত্যয় ঘটতে পারে।
এদিকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কোটি কোটি টাকার গার্মেন্টস পণ্য, ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল ও আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের বহু শিপমেন্ট পুড়ে গেছে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান।
ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে শুধু তাদের আর্থিক ক্ষতিই হয়নি, গুরুত্বপূর্ণ অনেক চালান পুড়ে গেছে। হাজার হাজার কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। এর প্রভাব মাঠ পর্যায়ে এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ব্যাপক হারে পড়বে। বিশেষ করে ওষুধ শিল্পের প্রচুর পরিমাণ কাঁচামাল আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। যা শুধু আর্থিক ক্ষতির কারণ নয়। এসব কাঁচামাল দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জীবন রক্ষাকারী ওষুধসহ ক্যান্সারের ওষুধ তৈরি করত।