September 14, 2025
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

ঢামেকে একসঙ্গে ৬ সন্তানের জন্ম দিলেন নারী

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে একসঙ্গে তিন ছেলে ও তিন মেয়ের জন্ম দিয়েছেন প্রিয়া নামে এক নারী। ওজন কম হওয়ায় তিনজনকে ঢাকা মেডিকেলের এনআইসিইউ এবং বাকি তিনজনকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে রাখা হয়েছে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে ঢামেকের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে ছয় সন্তানের জন্ম দেন তিনি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ইউনিট-১ এর অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. আবিদা সুলতানা বলেন, গত রাতে প্রিয়া নামে এক রোগী ভর্তি হন। সকালে তিনি ছয় সন্তানের জন্ম দেন। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটি বেবি বলা যায় না, এটি আসলে ২৭ সপ্তাহের ইনএবিটেবল অ্যাবরশন। তার আগে একটি পূর্ণবয়স্ক শিশু জন্মেছিল, তবে সেটি ডেলিভারির সময় মারা যায়। এবার যে ছয় সন্তান জন্ম নিয়েছে, তাদের মধ্যে তিনজন ছেলে ও তিনজন মেয়ে। তিনজনের ওজন প্রায় ৯০০ গ্রাম এবং তিনজনের ৮০০ গ্রাম। তিনি বলেন, শিশুদের মধ্যে তিনজন ঢাকা মেডিকেলের এনআইসিইউতে এবং বাকি তিনজন বেসরকারি হাসপাতালের এনআইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এখন পর্যন্ত আলহামদুলিল্লাহ সবাই জীবিত আছে, ভালো আছে। ডা. আবিদা সুলতানা বলেন, আমাদের দেশে সাধারণভাবে ২৮ সপ্তাহকে ‘ভায়াবল এইজ’ বলা হয়। এই রোগীর ক্ষেত্রে ডেলিভারি এর আগেই হয়ে গেছে। তবে ঢাকা মেডিকেলের এনআইসিইউ ফ্যাসিলিটি ভালো থাকায় ভাগ্যে থাকলে শিশুরা বেঁচে যেতে পারে। সাধারণত একসঙ্গে ছয়টি শিশু গর্ভে ধারণ করা স্বাভাবিকভাবে সম্ভব নয়। রোগী ওভুলেশন ইন্ডাকশন ড্রাগ সেবন করেছিলেন, যার ফলে একসঙ্গে একাধিক সন্তান ধারণ হয়েছে। জরায়ুর সীমিত ধারণক্ষমতার কারণে আগেভাগেই ডেলিভারি হয়েছে। এখন পুরো বিষয়টি আল্লাহর হাতে, আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিচ্ছি। ডা. আবিদা সুলতানা বলেন, ফার্টিলিটি চিকিৎসায় ওভুলেশন ইন্ডাকশন ড্রাগ সেবনের ফলে একসঙ্গে দুই, তিন, চার কিংবা এমনকি ছয়টি সন্তান ধারণ হওয়া স্বাভাবিক। ইনফার্টিলিটি চিকিৎসায় আইভিএ পদ্ধতিতেও একাধিক ভ্রূণ গঠিত হয়। সাধারণত অতিরিক্ত ভ্রূণ থাকলে সেসবের মধ্যে থেকে কয়েকটি অপসারণ করে বাকি ভ্রূণগুলোকে ভালোভাবে বড় হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, এই রোগী ওই ধরণের কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করেননি; ফলে একসঙ্গে ছয়টি ভ্রূণই বেড়ে উঠেছে এবং জরায়ুর সীমাবদ্ধ ধারণক্ষমতার কারণে ডেলিভারি আগেভাগেই করতে হয়েছে। এই ধরনের ইনফার্টিলিটি চিকিৎসা নিলে কনসেপশনের পর রোগীকে চিকিৎসকের নিকট নিয়মিত ফলো-আপ বজায় রাখতে হবে। অনেক সময় রোগীরা প্রথম ধাপ পেরিয়ে গেলে পরে সেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন না যার কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। প্রিয়ার খালু বাবুল জানান, তারা নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে এসেছেন। প্রিয়া তার শ্যালক হানিফের স্ত্রী, যিনি কাতার প্রবাসী। তিনি বলেন, প্রিয়া ছয় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন ঢাকা মেডিকেলের এনআইসিইউতে এবং বাকি তিনজন কাঁটাবনের একটি বেসরকারি হাসপাতালের এনআইসিইউতে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা আমাদের প্রতি খুব ভালো সহযোগিতা করেছেন, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
শেয়ার করুন: