November 22, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

ডুমুরিয়ার চেয়ারম্যান প্রার্থী তারা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে জমি লিখে নিয়ে টাকা না দেওয়ার অভিযোগ

দ. প্রতিবেদক
ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আজগর আলী বিশ্বাস তারা কর্তৃক অর্ধকোটি টাকা মূল্যের জমি লিখে নিয়ে টাকা না দিয়ে হুমকি প্রদানের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একই উপজেলার পূর্ব বিল পাবলা গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাস। রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় খুলনা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী বলেন, খুলনা জেলা আ’লীগের সদস্য আজগর বিশ্বাস তারা (মালিক বিশ্বাস প্রোপ্রার্টি) গত ৩০/১১/২০২১ ইং তারিখে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি (মৌজা-বিল পাবলা, খতিয়ান নং- ৩৫) উক্ত খতিয়ানে মোট ৮টি দাগ থাকলেও তার মধ্যে থেকে রাস্তার পার্শ্বের আর.এস দাগ নং- ১২৪৭২ ও ১২৪৭৬ দাগ থেকে ০.২৫ একর জমি ৫০ লক্ষ টাকা দাম ঠিক করে নিজের নামে পাওয়ার দলিল করে নেয়। দলিল করার সময় উক্ত আজগর বিশ্বাস তারা বলেন যে, “যখন জমিটা কবলা দলিল করে বিক্রি করবো, তখন আপনাকে টাকা দিবানি দাদা।” পরবর্তীতে যখন দেখি উক্ত জমি প্লট আকারে সব বিক্রি হয়ে গেছে, তখন জমি বিক্রির টাকা চাইতে গেলে নানা ধরনের তালবাহানা করে। কখনও বলে টাকা দিয়ে দিছি, আবার কখনও বলে আপনাকে চিনি না, আবার কখনও বলে আপনার ভাইপোর কাছে টাকা দিয়ে দিছি।
তারপর তারা বিশ্বাসের কথামতো আমি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে ভাইপো রথিন বিশ্বাসের নামে একটি দরখাস্ত করি। সেখানে বসাবসীর মধ্যে তারা বিশ্বাস জমি লিখে নেওয়া ও টাকা দিবে মর্মে সব স্বীকার করেন। কিন্তু পরবর্তীতে টাকা না দিয়ে পূর্বের ন্যায় নানা ধরণের তালবাহানা শুরু করে দেয়। এ বিষয়ে ২০২৩ সালের ২২ জুলাই জেলা আ’লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, তারা বিশ্বাসের কাছে পাওনাকৃত জমি বিক্রির ৫০ লক্ষ টাকা থেকে অদ্যাবধি কোন টাকা পরিশোধ করেন নাই। তারা বিশ্বাস এবং ভাইপো রথিন বিশ্বাস আমার কাছ থেকে জমির দাম ঠিক করে, জমি লিখে নিয়ে, টাকা না দিয়ে বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তাই নিজের জীবন রক্ষার্থে এখন আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমি একজন লিভার ক্যান্সারের রোগী। এই পর্যন্ত ৩০টি ক্যামো, ৩০টি রেডিও থেরাপি এবং ২৪ ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করে কোনমতে বেঁচে আছি। অসুস্থতার জন্য কোন কাজ-কর্ম করতে পারি না। তাই অর্থাভাবে বর্তমানে চিকিৎসাও গ্রহণ করতে পারছি না। আওয়ামী লীগ সমর্থন করার জন্য বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নির্যাতন সইতে না পেরে দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যেতে বাধ্য হই।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের মতো এখনও আমাকে জীবনের নিরাপত্তায় পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। বিশ্বাস প্রোপার্টিজের আড়ালে একদল সন্ত্রাসী লালন-পালন করেন এবং এই বাহিনী দিয়ে আমার মতোন অনেকেরই জমি-জমা, পৈত্রিক সম্পত্তি লিখে নেন এবং পরবর্তীতে পাওনা পরিশোধ না করে আমার মতোনই তাদের সাথে প্রতারণা শুরু করেন। শুধু তাই নয়, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে তারা বিশ্বাসের বাহিনী কর্তৃক হামলা-মামলা করতে কুন্ঠাবোধ করেনা।
এমতাবস্থায আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এমপি, জেলা আ’লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক এড. সুজিত অধিকারীর কাছে জোর দাবি জানাই, আমি যাতে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রির প্রাপ্য টাকাগুলো পেয়ে নিজের লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়ে আরও কিছুদিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে পারি, তাহার সু-ব্যবস্থা করতে উল্লেখ্য নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এছাড়াও পুলিশ, প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আপনারা এই ভূমিদস্যু তারা বিশ্বাস সম্পর্কে আরও বেশি খোঁজ-খবর নেন। তার দ্বারাই আজ আমার মতো আ’লীগের সমর্থকদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে, সর্বস্ব হারাতে হচ্ছে।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন: