ডিম-মুরগির উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা : খামারিদের সাথে বৈঠকে বসছে সরকার
বিভিন্ন অভিযোগে আগামী ১ মে থেকে সারাদেশে ডিম-মুরগির উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। এরইমধ্যে তারা ১০ দফা দাবিও জানিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে এসব বিষযে আলোচনার জন্য রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুর ২টায় খামারিদের সঙ্গে বৈঠক বসছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সেখানে, খামারিরা সরাসরি তাদের মতামত এবং সমস্যা তুলে ধরবেন।
বিপিএ সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, পোল্ট্রি শিল্পের চলমান সংকট এবং খামারিদের ডাকা আসন্ন খামার বন্ধের কর্মসূচির মুখে এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পোল্ট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার সিন্ডিকেট ভেঙে বাজার স্থিতিশীল করা এবং প্রান্তিক খামারিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে — পোল্ট্রি পণ্যের দাম নির্ধারণে জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং-এর ওপর নিয়ন্ত্রণ, একটি স্বাধীন পোলট্রি মার্কেট রেগুলেটরি অথরিটি গঠনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এর আগে, গত ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আগামী ১ মে থেকে দেশব্যাপী খামারিরা খামার বন্ধ করে দেবেন— এমন ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর কারণ সম্পর্কে জানানো হয়, দেশজুড়ে প্রান্তিক ডিম ও মুরগি খামারিদের মাঝে হাহাকার দেখা দিয়েছে। গত দুই মাসে তারা প্রায় ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকার লোকসানের মুখে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে পোল্ট্রি খাত ধ্বংসের মুখে পড়লেও সরকারের নীরব ভূমিকা নিয়ে পালন করছে।
তারা দাবি করেন, গত রমজান ও ঈদ মৌসুমেও ভয়াবহ লোকসান দিয়ে প্রান্তিক খামারিরা প্রতিদিন ২০ লাখ কেজি মুরগি উৎপাদন করেছেন। প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা লোকসানে, এক মাসে লোকসান হয়েছে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা।
এছাড়া, দৈনিক ৪ কোটি ডিমের মধ্যে প্রান্তিক খামারিরা উৎপাদন করেন ৩ কোটি ডিম। প্রতি ডিমে ২ টাকা করে লোকসানে, দুই মাসে ডিমে লোকসান হয়েছে ৩৬০ কোটি টাকা। মোট দুই মাসে ডিম ও মুরগির খাতে লোকসান দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। কিন্তু এমন অবস্থায় সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর নীরবতায় কিছু কর্পোরেট কোম্পানি পুরো পোল্ট্রি শিল্প দখলের ষড়যন্ত্রে নেমেছে বলেও উল্লেখ করেন সংশ্লিষ্টরা।