ট্রাম্পের মাথায় কাঁঠাল ভাঙলেন এরদোয়ান!
পরের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার মতো দারুণ দক্ষতা অর্জন করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। একদিকে ন্যাটো সদস্য এবং অন্যদিকে ঘনিষ্ঠ রুশ মিত্র হওয়ার সুবাদে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তুরস্কের স্বার্থ উদ্ধারে ভয়ংকর সব খেলায় মেতেছেন ইউরেশিয়ান এ নেতা।
বিশ্ব নেতাদের ভূগোল বুঝিয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করে নেওয়ার খেলায় হয়তো তার মতো দক্ষ খেলোয়াড় এ মুহূর্তে খুব কম রাষ্ট্রপ্রধানই আছেন। এরদোয়ানের এমন খেলার ফাঁদে পড়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও।
জানা যায়, ট্রাম্পকে কথার জালে ফেলে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে প্রভাবিত করেছেন এরদোয়ান। এমন দাবি করেছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচআর ম্যাকমাস্টার। তার লেখা ‘এট ওয়ার উইথ আওয়ার সেল্ভস : মাই ট্যুর অব ডিউটি ইন দ্য ট্রাম্প হোয়াইট হাউস’ বইতে এমন দাবি করেন তিনি।
এসব তথ্য উঠে আসে দ্য মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে। বইতে ম্যাকমাস্টার দাবি করেন, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বাশার আল আসাদ নিশ্চিতভাবে জয়ী হতে যাচ্ছেন বলে ট্রাম্পকে বুঝাতে সক্ষম হন এরদোয়ান।
এ সময় সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে সেখান থেকে মার্কিন সেনাদের সরিয়ে নিতে ট্রাম্পকে মনস্তাত্ত্বিক চাপ প্রয়োগ করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। এর ফলে সেখানে তুর্কি সেনাদের প্রবেশের সুযোগ তৈরি হবে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে জানান এরদোয়ান।
২০১৭ সালের ২৪ নভেম্বর এক ফোনকলে এরদোয়ান ট্রাম্পকে জানান, কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স তথা এসডিএফকে মার্কিন সমর্থন দেওয়ার আর কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ এরই মধ্যে ইসলামিক স্টেটের সন্ত্রাসীরা সে অঞ্চলে পরাজিত হয়েছে। এ সময় পুতিনের মতো এরদোয়ানও ট্রাম্পের কাছে আসাদকে সিরিয়া গৃহযুদ্ধের নিশ্চিত জয়ী পক্ষ হিসেবে উপস্থান করেন।
সাবেক এ মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানান, ট্রাম্প নিজেও জানতেন তাকে ভুল বুঝানো হচ্ছে। তবে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি নিয়ে অনাগ্রহের ব্যাপারটি নিয়ে ভালোভাবে খেলতে পেরেছেন পুতিন ও এরদোয়ান। তুর্কি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বোঝাতে সক্ষম হন, এসডিএফকে অস্ত্র সহায়তা করা মানে মার্কিন অর্থের অপচয়।
বইতে সাবেক এ মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা দাবি করেন, পুতিন এবং এরদোয়ান উভয় নেতাই ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে তাকে প্রতিবন্ধকতা মনে করতেন। এমনকি ফোনকলে এরদোয়ান ম্যাকমাস্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে এরদোয়ানের ফোনকল স্থাপনে দেরি করেছেন।
মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও লেখেন, ট্রাম্প সেসময় এরদোয়ানকে একটি ব্যক্তিগত ফোন নম্বর দেওয়ার কথা জানান- যাতে তুর্কি প্রেসিডেন্ট যে কোনো সময় মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কোনো বাধা ছাড়াই যোগাযোগ করতে সক্ষম হন।