October 11, 2025
আন্তর্জাতিক

ঝুঁকি আছে, তবুও ট্রাম্পকে বিশ্বাস করছে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী, কারণ কী

এক সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘বর্ণবাদী’, ‘বিশৃঙ্খলার উপকরণ’ হিসেবে অভিহিত করেছিল ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। তবে গত মাসের একটি ফোন কলের পর ট্রাম্পকে বিশ্বাস করা শুরু করেছে তারা। তাদের ধারণা তৈরি হয়েছে, যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে ইসরায়েলি সব জিম্মিকে ছেড়ে দিলেও, ট্রাম্প ইসরায়েলকে আর যুদ্ধ শুরু করতে দেবেন না। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে শনিবার (১১ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি দুটি সূত্র। সেই ফোন কলটিতে কথা বলেন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও কাতারের প্রধানমন্ত্রী। কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের নেতাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোয় ওই ফোন কলে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘ক্ষমা’ চান নেতানিয়াহু। আর এই ফোন কলের পর ট্রাম্পের ওপর হামাসের বিশ্বাস তৈরি হয় যে, নেতানিয়াহুকে থামাতে পারবেন তিনি। এছাড়া ট্রাম্প সত্যিই যুদ্ধ বন্ধ করতে চাচ্ছেন সেই ধারণাও তৈরি হয় তাদের মধ্যে। আর এই বিশ্বাসের জায়গা থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে গত বুধবার যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় হামাস। যা গতকাল শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী, সব ইসরায়েলি সেনাকে গাজা থেকে প্রত্যাহার না করার শর্তেই সব জিম্মিকে ছেড়ে দিচ্ছে হামাস। যারা যুদ্ধে তাদের সবচেয়ে বড় ‘সম্পদ’ ছিল। যাদের দিয়ে গত দুই বছর ধরে হামাস হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্ত ও যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা করছে। ফিলিস্তিনি একটি সূত্র বলেছেন, শুধুমাত্র ট্রাম্পের ওপর বিশ্বাস করে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি হামাসের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, তারা তা জানেন। কিন্তু এই যুদ্ধে ট্রাম্প এতটাই যুক্ত হয়েছেন যে তাদের বিশ্বাস তিনি যুদ্ধ আর শুরু হতে দেবেন না। অপর ফিলিস্তিনি সূত্র বলেছেন, হামাস নেতারা জানেন, তারা যে ঝুঁকি নিয়েছেন সেটি হিতে বিপরীত হতে পারে। জিম্মিদের মুক্ত করার পর ইসরায়েল আবারও হামলা শুরু করতে পারে। যেমনটা তারা গত জানুয়ারির যুদ্ধবিরতির সময় করেছিল। আর ওই সময় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনে ট্রাম্প প্রশাসনও কিছুটা জড়িত ছিল। কিন্তু মিসরে যখন হামাস ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করে। তখন হামাসকে ট্রাম্পের কাছের লোকেরা পূর্ণ নিশ্চয়তা দেন যুদ্ধ শুরু হবে না। তাই নিজেদের প্রধান কিছু শর্ত পূরণ ছাড়াই হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। হামাসের একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্প যে কতটা উদগ্রীব সেটি সর্বশেষ আলোচনার সময় বোঝা গেছে। তিনি আলোচনা চলাকালীন তিনবার ব্যক্তিগতভাবে ফোন করেন। এই আলোচনায় তার খুব কাছের লোক স্টিভ উইটকোফ এবং তার জামাতা জার্ড ক্রুসনার উপস্থিত ছিলেন। যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে এটির মাধ্যমে যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার পথ হয়ত তৈরি হবে। কিন্তু ট্রাম্প যে ২০ দফার প্রস্তাব দিয়েছেন সেগুলোর সব হয়ত পূরণ হবে না বলে জানিয়েছে রয়টার্স। কিন্তু নেতানিয়াহুকে কাতারের কাছে যেভাবে ট্রাম্প ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেছেন এবং ইরান-ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধ বন্ধে ভূমিকা রেখেছেন, এতে হামাসের আলোচকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে যে, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার সাথেই সাথেই ইসরায়েলকে ট্রাম্প আবারও যুদ্ধ শুরু করতে দেবেন না।
শেয়ার করুন: