November 24, 2024
আঞ্চলিকজাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

ঝিনাইদহে বিকৃত যৌনাচার থেকে সিরিয়াল কিলার, ৭ দিনে তিন খুন

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ঝিনাইদহে ৭ দিনের ব্যবধানে খুন হয় এক নারীসহ তিনজন। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পুলিশ। একই রকম হত্যাকাণ্ডের ধরণ দেখে পুলিশ মাঠে নামে। এরই মধ্যে গত ১০ ফেব্রয়ারি সদর উপজেলার পোড়াহাটী গ্রামে ধর্ষণের পর খুন করা হয় বিবিজান নেছা (৪৫) নামে এক নারী। এ ঘটনায় জনতার হাতে আটক হয় ইয়াদ আলী মোল্লা নামে এক খুনি।
পুলিশ আদালতের মাধ্যমে ইয়াদ আলী মোল্লাকে ৫ দিনের রিমান্ডে চায়। আদালত দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিবিজান নেছা হত্যার তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে বিকৃত যৌনাচার থেকে ইয়াদ আলীর সিরিয়াল কিলার হয়ে ওঠার ভয়ঙ্কর গল্প। কিভাবে সে একে একে তিনটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তার বর্ণনা দেন ঘটনাস্থলে গিয়ে। তার এই বর্ণনা শুনে চমকে ওঠে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সিরিয়াল কিলার ইয়াদ আলী নড়াইল জেলা শহরের বিলডুমুরতলা গ্রামের মৃত চাঁন মোল্লার ছেলে।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার জানান, গত ১০ ফেব্রয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে বিবিজান নেছা (৪৫) নামের এক নারীকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে ইয়াদ আলী মোল্লা। পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে র‌্যাবে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় ওইদিন নিহতের ছেলে আবু জাফর বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি মামলা করে।
এর আগে গত ৬ ফেব্রয়ারি সদর উপজেলার তেঁতুলতলা এম কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে ইলিয়াস আলী পাটোয়ারি ও ৯ ফেব্রয়ারি লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিঁড়িঘরের নিচ থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যার ধরণ এক রকম দেখে সন্দেহ হলে ওই দুই হত্যার সাথে জড়িত কিনা তা নিয়ে ইয়াদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পুলিশের কাছে ইয়াদ আলী স্বীকার করে, সে ওই দুই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত।
ইয়াদ আলীর দেয়া খুনের বর্ণনার বরাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, গত ৫ ফেব্রয়ারি রাতে এম কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় ইলিয়াস পাটোয়ারির সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করে ইয়াদ আলী। প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে টিউবওয়েলের হাতল দিয়ে মাথায় আঘাতের পর আঘাত করে হত্যা করা হয় চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার নুরপুর গ্রামের বৃদ্ধ ইলিয়াসকে।
এর আগে ৩ ফেব্রয়ারি লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা অজ্ঞাত এক ব্যক্তির সঙ্গেও ইয়াদ বিকৃত যৌনাচারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। সেই মরদেহ উদ্ধার হয় ৯ ফেব্রয়ারি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার জানান, আমরা তদন্ত করে ও হত্যার বর্ণনা দেখে নিশ্চিত হয়েছি যে বিকৃত যৌনাচার ও ধর্ষণে বাধা দেয়ার কারণে ইয়াদ আলী একে একে তিনটি হত্যা করে।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মো. সোহেল রানা বলেন, তিনটি ঘটনায় দুইটিতে হত্যা মামলা ও একটিতে অপমৃত্যু মামলা হয়েছিল। এখন তিনটিই হত্যা মামলা বলে রেকর্ড হবে।
তিনি বলেন, ইয়াদ আলী আরও কোনো হত্যার সাথে জড়িত কি না তা বের করার চেষ্টা করছি। ইয়াদ আলী মাদক সেবন করে বিকৃত যৌনাচার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে হানা দিতো। সে নড়াইল থেকে গত ৫ মাস আগে ঝিনাইদহ শহরে আসে বলে পুলিশকে জানিয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *