জেলেনস্কিকে ‘নির্বাচনকালীন’ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেন পুতিন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি যদি জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দেন, তাহলে নির্বাচন উপলক্ষে দেশটিতে সাময়িকভাবে হলেও হামলা বন্ধ রাখবে রুশ বাহিনী। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল শনিবার রাশিয়ার সরকারি বার্তাসংস্থা রাশিয়ান টেলিভিশন (আরটি)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেছেন, “ইউক্রেন যদি নির্বাচনের ঘোষণা দেয়, তাহলে নির্বাচনকালীন নিরাপত্তার স্বার্থে ভোটের দিন ইউক্রেনের অভ্যন্তরে হামলা করা থেকে বিরত থাকতে প্রস্তুত আছে রুশ বাহিনী। এমনকি সীমান্তবর্তী সীমান্ত পেরিয়ে যেসব ইউক্রেনীয় রাশিয়ার ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছেন, তারাও ভোট দিতে ইউক্রেনে যেতে পারবেন। রুশ সেনাবাহিনী এক্ষেত্রে কোনো বাধা দেবে না।”
“তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর যুদ্ধবিরতির সুযোগ নিয়ে ইউক্রেন যদি অস্ত্র-সেনা মজুত করা শুরু করে তাহলে তার পরিণতি খুব খারাপ হবে।”
ইউক্রেনে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালের মে মাসে। সেই নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০ মে রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণ করেন ভ্লাদিমির জেলেনস্কি।
ইউক্রেনের সংবিধানে প্রেসিডেন্টের মেয়াদকাল ৫ বছর। সেই হিসেবে ২০২৪ সালের মে মাসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলেনস্কির বৈধ মেয়াদ পেরিয়ে গেছে। ২০২৪ সালের পর কয়েকবার নির্বাচনের দাবি উঠেছে ইউক্রেনে; কিন্তু ‘দেশে যুদ্ধ চলছে’— এই অজুহাতে প্রতিবারই সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন জেলেনস্কি এবং দফায় দফায় সামরিক আইনের মেয়াদ বাড়িয়ে এখনও ক্ষমতায় আছেন তিনি।
২০২৪ সালের মে মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই মস্কো বলে আসছিল, প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলেনস্কির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় জেলেনস্কি বা তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত সংলাপে বসতে ইচ্ছুক নন রুশ কর্মকর্তারা। পুতিন বলেছিলেন, জেলেনস্কি যদি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন— তাহলে নির্বাচনে বিজয়ী নতুন সরকারের সঙ্গে সংলাপে আপত্তি নেই মস্কোর। এমনকি জেলেনস্কি যদি নিজে যদি ফের নির্বাচিত হন, তাহলেও।
কিন্তু ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা, যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের কর্মকর্তারা এবং জেলেনস্কি নিজে মস্কোর এই আহ্বানে কর্ণপাত করেননি।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এ দৃশ্যপটে পরিবর্তন আসে। ২০২৫ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধাবসানের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
মূলত ট্রাম্পের চাপেই সম্প্রতি জেলেনস্কি এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে ইউক্রেনে।

