জাতীয় নাগরিক কমিটির পরিধি বাড়ল, যুক্ত হলেন সারজিসসহ আরও ৪৫ জন
জাতীয় নাগরিক কমিটির পরিধি আরও বাড়ানো হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সারজিস আলমসহ আরও ৪৫ জনকে কেন্দ্রীয় সদস্য করে নিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। সারজিস ছাড়াও জয়নাল আবেদীন শিশির, প্লাবন তারিক, শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি ও আরিফুর রহমান তুহিনকেও কমিটিতে রাখা হয়েছে।
‘রাষ্ট্র পুনর্গঠন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন বাংলাদেশের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত সফল করার লক্ষ্যে’ আত্মপ্রকাশের আড়াই মাসের মাথায় এ প্ল্যাটফর্মের কেন্দ্রীয় সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০৭ জনে।
সোমবার রাতে কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সদস্য বাড়ানোর কথা জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটি বর্ধিতকরণের চলমান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের ‘কেন্দ্রীয় সদস্য’ ঘোষণা করা হলো।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও শেখ হাসিনার পতনের পর নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ ঘটে জাতীয় নাগরিক কমিটির। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের জন্য ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ৫৫ সদস্যের এ সংগঠনটির আহ্বায়ক করা হয় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে এবং সদস্যসচিব করা হয় আখতার হোসেনকে। সেই কমিটির পরিধি বাড়িয়ে নতুন ৪৫ জনকে যুক্ত করা হলো।
জাতীয় নাগরিক কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। ছাত্র-জনতার এ অভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে কেন্দ্রীয় কমিটিতে আরো ৪৫ জনকে যুক্ত করা হয়েছে। কমিটি বর্ধিতকরণের চলমান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ৪৫ ব্যক্তিদের নিয়ে ‘কেন্দ্রীয় সদস্য’ ঘোষণা করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সদস্যরা হলেন- সারজিস আলম, আলী আহসান জোনায়েদ, দেবাশীষ চক্রবর্তী, মোহাম্মদ এজাজ, শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি, কৈলাশ চন্দ্র রবিদাস, রাফে সালমান রিফাত, উশ্যেপ্রু মারমা, উম্মে হাবিবা বেনজির, মীর আরশাদুল হক, আলী নাছের খান, মামুনুর রশীদ, আবু সাঈদ লিওন, সাকিব মাহদী, জোবাইরুল হাসান আরিফ, সৈয়দা নীলিমা দোলা, শরিফ ওসমান হাদি, আলী আম্মার মুয়াজ, আরেফিন মোহাম্মদ, ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু, কৃষিবিদ গোলাম মর্তুজা সেলিম, সোনামণি কর্মকার, ডা. মিনহাজুল আবেদীন, সাইদ উজ্জ্বল, মো. বুরহান উদ্দিন নোমান, মো. রাকিব হোসেন, মো. আরিফুর রহমান (তুহিন), রাফিদ ভুঁইয়া, জয়নাল আবেদীন শিশির, জনি আকন্দ, মিয়াজ মেহরাব তালুকদার, মো. নাইম আহমাদ, সাগর বড়ুয়া, প্লাবন তারিক, এম ওয়ালি উল্লাহ, মোশফিকুর রহমান জোহান, সাদিয়া ফারজানা, সাইফুল্লাহ হায়দার, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহছান, এহতেশাম হক, অরণি সেমন্তি খান, মাহবুব আলম মাহির, ডা. আশরাফুল আলম সুমন, দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাসের মাথায় গত ৮ সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। রাষ্ট্র সংস্কার ও পুনর্গঠনের লক্ষ্য নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়। সেদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক অনুষ্ঠানে ৫৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরে যুক্ত করা হয় আরও সাতজনকে।
কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও এবি পার্টির সাবেক গবেষণা ও তথ্য বিষয়ক সহকারী সম্পাদক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটির সদস্য সচিব করা হয় ঢাবি আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও ডাকসুর সাবেক সমাজকল্যাণ সম্পাদক আখতার হোসেনকে।
কমিটির অন্য ৫২ সদস্যদের মধ্যে আছেন- মায়ের ডাক সংগঠনের সংগঠক সানজিদা ইসলাম তুলি, চিকিৎসক তাসনীম জারা, চিকিৎসক ও অ্যাকটিভিস্ট তাজনূভা জাবীন, বাংলাদেশে মেটার পাবলিক পলিসি প্রধান সাবহানাজ রশীদ দিয়া, গবেষক ও লেখক সারোয়ার তুষার, কনটেন্ট ক্রিয়েটর সালমান মুক্তাদির, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাবেক সদস্য প্রীতম দাশ, আইনজীবী মানজুর-আল-মতিনসহ আরও অনেকে।