September 19, 2024
আন্তর্জাতিক

জয় বলেছেন মা পদত্যাগ করেননি, হাসিনা বললেন ভিন্ন কথা

গত ৫ আগস্ট সকালে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কি না, সেই বিষয়ে শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। জয় একদিন আগে বলেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার আগে তার মা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি। কিন্তু রোববার ভারতীয় দৈনিক ইকোনমিক টাইমসকে শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি পদত্যাগ করেছি।

তাদের এই পরস্পরবিরোধী বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। ইকোনমিক টাইমসকে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘‘আমাকে যাতে লাশের মিছিল দেখতে না হয়, সেজন্য আমি পদত্যাগ করেছি। তারা ছাত্রদের লাশ নিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল, কিন্তু আমি তা করতে দিইনি। আমি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।’’

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, ‘‘আমি যদি দেশে থাকতাম, তাহলে আরও প্রাণহানি ঘটতো, আরও সম্পদ ধ্বংস হয়ে যেত। যে কারণে আমি দেশ ত্যাগ করার মতো অত্যন্ত কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আপনারা আমাকে বেছে নিয়েছেন বলেই আমি আপনাদের প্রধানমন্ত্রী হয়েছি। আপনারাই আমার শক্তি।’’

কিন্তু মাত্র একদিন আগে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘আমার মা কখনই আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেননি। তিনি পদত্যাগ করার সময় পাননি।’’

‘‘তিনি একটি বিবৃতি দেওয়ার এবং পদত্যাগ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তার আগেই বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে পদযাত্রা শুরু করে। আর তখন সময় ছিল না। এমনকি আমার মা ব্যাগ গোছাতেও পারেননি। সংবিধান অনুযায়ী, এখনও তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।’’

পদত্যাগের বিষয়টি ছাড়াও রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের বিষয়েও মা-ছেলের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। গত ৫ আগস্ট বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয় বলেছিলেন, ‘‘তার মা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। তিনি এতটাই হতাশ যে, কঠোর পরিশ্রম করার পরও সবাই তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল।’’

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, তার মা ৪ আগস্ট থেকে পদত্যাগ করার কথা ভাবতে শুরু করেছিলেন এবং পরে পরিবারের সদস্যদের চাপের মুখে নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে দেশ ছেড়েছেন।

রোববার ইকোনমিক টাইমসকে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে আমি শিগগিরই (বাংলাদেশে) ফিরে আসব। আওয়ামী লীগ বারবার উঠে দাঁড়িয়েছে।’’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। ওই দিন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, শেখ হাসিনা তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। পরে শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়।

শেয়ার করুন: