November 14, 2024
আন্তর্জাতিক

জম্মু-কাশ্মিরের বিধানসভায় ধস্তাধস্তি

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরকে আবারও সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের অধীনে নেওয়ার প্রস্তাব ঘিরে বিধানসভায় ধ্বস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিধানসভায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের ডাকা হয়।

বিধানসভা নির্বাচনের পর জম্মু ও কাশ্মিরের বিধানসভার প্রথম অধিবেশনেই বিধায়কদের মাঝে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের আওতায় কাশ্মির কিছু বিশেষ অধিকার ভোগ করত। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির সরকার ২০১৯ সালে এই অনুচ্ছেদ বিলোপ করে।

বুধবার বিজেপির বিরোধের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মির বিধানসভায় কণ্ঠভোটে একটি প্রস্তাবে গৃহীত হয়। সেখানে ৩৭০ অনুচ্ছেদ আবারও চালু করার দাবি করা হয়েছে। সে জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে আলোচনা করার কথাও বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। বিজেপির বিধায়ক সুনীল শর্মার বক্তৃতার সময় বিধায়ক শেখ খুরশিদ একটি ব্যানার নিয়ে ওয়েলে নেমে পড়েন। খুরশিদ হলেন বারামুলার সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার রশীদের ভাই। সেই ব্যানারে ৩৭০ অনুচ্ছেদ ও সংবিধানের ৩৫-এ অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনার দাবি ছিল। রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির দাবিও করা হয়।

সেই সময় বিজেপির কিছু বিধায়ক ওয়েলে নেমে পড়েন। একজন খুরশিদের হাত থেকে ব্যানারটি ছিনিয়ে নিতে যান। অন্যরা ব্যানারটি ছিঁড়তে চান। সেসময় পিপলস কনফারেন্সের সাজ্জাদ লোন সেদিকে চলে যান। বিধায়কদের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তি শুরু হয়।  কিছক্ষণ ধরে গোলমাল চলতে থাকে। স্পিকার অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন।  মার্শাল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সাজ্জাদ লোনের অভিযোগ

সাজ্জাদ লোন পরে সাংবাদিকদের বলেছেন, ন্যাশনাল কনফারেন্স বিধায়করা খুরশিদকে বাঁচাতে আসেননি। আমরা তার সঙ্গে নির্বাচনে লড়েছি। কিন্তু কাশ্মিরী হিসাবে আমি যখন দেখেছি, তিনি আক্রান্ত হয়েছেন, তখন তাকে বাঁচাতে গিয়েছি। আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি।”

তার অভিযোগ, বুধবার ন্যাশনাল কনফারেন্সের আনা প্রস্তাব তিনি সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র টুইট করে বলেন, আমরা বিজেপির সঙ্গী। এসব বাজে কথা অনেক হয়েছে।

বিজেপির অভিযোগ

বিরোধী নেতা সুশীল শর্মা বলেছেন, ওই প্রস্তাব যতক্ষণ প্রত্যাহার না করা হচ্ছে, ততক্ষণ তারা বিধানসভা চালাতে দেবেন না। বিজেপি বিধানসভার বাইরেও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাবে। বিজেপির অভিযোগ, স্পিকার ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতার মতো ব্যবহার করছেন। তিনি স্পিকারের মতো নিরপেক্ষ অবস্থান নিচ্ছেন না।

দিল্লিতে সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেসের সমালোচনা করে বলেছেন, তারা জম্মু ও কাশ্মিরে সংবিধানের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে দিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, পিডিপি প্রথমে একটা প্রস্তাব এনেছিল। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য ঠিক থাকলে তারা নিশ্চয়ই ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে আলোচনা করত। তিনি বলেন, জম্মু ও কাশ্মিরের মানুষ ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের সিদ্ধান্ত সমর্থন করে না। বুধবার ন্যাশনাল কনফারেন্সের আনা প্রস্তাব কণ্ঠভোটে গৃহীত হয়।

শেয়ার করুন: