September 19, 2024
আঞ্চলিক

চোখের চিকিৎসায় থাইল্যান্ড যাচ্ছেন ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শাফিল

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে চোখ হারাতে বসা খুলনার আব্দুল্লাহ শাফিল উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যাচ্ছেন। আগামীকাল সোমবার সকাল ১০টায় তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেবেন।

আব্দুল্লাহ শাফিলের বাঁ চোখ পুরো নষ্ট হয়ে গেছে। অপর চোখটিও ঘোলা হয়ে গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবিতে গত ২ আগস্ট খুলনায় পুলিশের গুলিতে শাফিলের বাঁ চোখ গুরুতর জখম হয়।

শাফিল খুলনার নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (ইইই) প্রথম বর্ষের ছাত্র। খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকায় মা–বাবার সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি। তাঁর গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের জিউধারা গ্রামে। তাঁর বাবা ইউনুস আলী খোকন গ্রামে মাছের ব্যবসা করেন।

গুলিবিদ্ধ আব্দুল্লাহ শাফিল বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবিতে গত ২ আগস্ট বিকেলে খুলনায় আন্দোলন চরমে পৌঁছায়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্র-জনতার মুখোমুখি অবস্থান নেয় পুলিশ। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার একপর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেলের পাশাপাশি ছররা গুলি ছুড়তে শুরু করে। বন্ধুদের সঙ্গে সেই আন্দোলনে অংশ নেন তিনি।

সম্মুখ সারিতেই ছিলেন। হঠাৎ তাঁর চোখের সামনে জ্বলে ওঠে লাল আলো। মুহূর্তে অন্ধকার হয়ে যায় তাঁর চারপাশ। একাধিক স্প্লিন্টার আঘাত করে চোখ, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে। বন্ধুরা উদ্ধার করে নিয়ে যান হাসপাতালে।

খুলনা ও ঢাকার একাধিক চক্ষু হাসপাতালে দেখিয়েও লাভ হয়নি তাঁর। গুলি লাগায় বাঁ চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। চোখে ও মাথায় এখনো স্প্লিন্টার রয়ে যাওয়ায় ডান চোখটিও নষ্ট হওয়ার উপক্রম প্রায়। বর্তমানে এই চোখটিও ঘোলা হয়ে গেছে। দুই চোখে এখন অসহ্য যন্ত্রণা। এই যন্ত্রণা সহ্য করা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘এখন আর যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছি না। যে কারণে পারিবারিক সিদ্ধান্তে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যাচ্ছি। আমার চিকিৎসার জন্য সেখানে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা লাগবে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ লাখ টাকা জোগাড় হয়েছে। আমার পরিবার, আত্মীয়স্বজন এবং দেশে-বিদেশে থাকা বিভিন্ন ভাই-বোনেরা এই টাকা দিয়েছেন। সেই টাকা নিয়েই কাল (সোমবার) সকাল ১০টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেব। আমার সঙ্গে আমার আব্বা ও মামা মাহমুদুল হাসান যাবেন।’

শাফিল আরও বলেন, ‘আমার বিষয়টি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে জানানো হয়েছে। তারাও চেষ্টা করছে। কিন্তু বিভিন্ন প্রক্রিয়ার কারণে হয়তো সেটা দেরি হচ্ছে।’ আব্দুল্লাহ শাফিল তাঁর চিকিৎসার জন্য সবার সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন।

শেয়ার করুন: