August 1, 2025
আন্তর্জাতিক

চীনা নাগরিকদের জন্য ফের পর্যটক ভিসা ইস্যু করছে ভারত

চীনা নাগরিকদের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা ভারতের পর্যটক ভিসা আবারও দেওয়া শুরু করছে নয়াদিল্লি। বুধবার দিল্লিতে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ জুলাই থেকে চীনা নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসা ইস্যুর কাজ পুনরায় শুরু হচ্ছে। প্রতিবেশী দুই দেশের টালমাটাল সম্পর্ক মেরামতের অংশ হিসেবে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর প্রথমবারের মতো চীনা নাগরিকদের জন্য পর্যটক ভিসা চালুর এই উদ্যোগ নিলো দিল্লি। এর আগে, ২০২০ সালে বিতর্কিত হিমালয় সীমান্তে দুই দেশের সৈন্যদের সংঘর্ষের পর ভারত-চীনের সম্পর্কে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। ওই সংঘর্ষের পর ভারত চীনা বিনিয়োগে কড়াকড়ি আরোপ ও শত শত জনপ্রিয় চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে এবং যাত্রী পরিবহন রুট বন্ধ করে দেয়। প্রায় একই সময়ে কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে চীনও ভারতীয় নাগরিকসহ বিদেশিদের জন্য ভিসা স্থগিতের ঘোষণা দেয়। পরে ২০২২ সালে এই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের জন্য আবারও ভিসা দেওয়া শুরু করে চীন। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ভারতীয় নাগরিকদের জন্য পর্যটক ভিসায় নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে বেইজিং। ওই সময় উভয় দেশ পুনরায় আকাশ পথে যাত্রী পরিবহন শুরুর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়। গত বছর উভয় দেশের কর্মকর্তাদের মাঝে একাধিক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর সম্প্রতি চিরবৈরী এই দুই প্রতিবেশীর সম্পর্কে ক্রমান্বয়ে উন্নতি দেখা যাচ্ছে। গত বছরের অক্টোবরে রাশিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মাঝে বৈঠন অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেছেন, পর্যটক ভিসা চালুর বিষয়ে ভারতের নেওয়া ইতিবাচক পদক্ষেপে স্বাগত জানায় বেইজিং। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ও দ্বিপাক্ষিক পরামর্শের মাধ্যমে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আগ্রহী চীন। ভারত এবং চীনের মাঝে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। যেখানে উভয় দেশের সৈন্যরা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) নামে পরিচিত ডি ফ্যাক্টো সীমান্তে যেকোনও ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার এড়াতে দীর্ঘদিনের প্রোটোকল মেনে চলেন। কিন্তু বিতর্কিত এই সীমান্ত এলাকায় চীন-ভারতের সৈন্যরা প্রায়ই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬২ সালে দুই দেশ ভয়াবহ সীমান্ত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং সেই সীমান্ত বিরোধ এখনও পুরোপুরি নিষ্পত্তি হয়নি। চলতি মাসে বেইজিং সফরে গিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছিলেন, প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য সীমান্ত উত্তেজনা নিরসন, সৈন্য প্রত্যাহার এবং ব্যবসায়িক বিধি-নিষেধমূলক পদক্ষেপ এড়িয়ে চলতে হবে।
শেয়ার করুন: