‘গুলি করলে মরে একটা, বাকিডি যায় না স্যার’
কোটা সংস্কার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের বল প্রয়োগ, হাজারো হতাহতের ঘটনায় দেশের পরিস্থিতি বিগড়ে যায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে যোগ দেয় সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনতা।
সবাই নিজ নিজ জায়গায় শক্ত অবস্থান নেয়। এ অবস্থায় স্বৈরাচারখ্যাত সরকার আরও শক্ত হয়। মানুষ হত্যা, নির্যাতনও বাড়ে। কিন্তু ছাত্র-জনতা সম্মিলিত শক্তির কাছে পরাস্ত হয়ে উৎখাত হতে হয় আওয়ামী লীগকে।
পতনের আগে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে দমাতে নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শেখ হাসিনা ব্যবহার করেন নিজের পরিকল্পনা মতো। আন্দোলনকারীদের স্থল পথে নির্বিচারে গুলি করে মারে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব। আকাশ পথেও তাদের ওপর চালানো হয় হামলা। সেনাবাহিনীকেও হাসিনা এ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করেছিলেন। এমন হাজারো ভিডিও-ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
কিন্তু চোখ আটকায় একটি ভিডিওতে যেখানে দেখা যায় স্বয়ং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামালকে। এক পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে পরিস্থিতি সম্পর্কে আপডেট নিচ্ছিলেন তিনি।
কামাল যার কাছ থেকে আপডেট নিচ্ছিলেন তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সদস্য ইকবাল। ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্য সাবেক মন্ত্রীকে একটি ভিডিও দেখাচ্ছিলেন, যেখানে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের গুলি করার চিত্র দেখা যাচ্ছিল।
ইকবাল ভিডিও দেখানোর সময় কামালের সঙ্গে কথা বলছিলেন। জানাচ্ছিলেন কীভাবে পুলিশ গুলি চালাচ্ছিল। কিন্তু ছাত্রদের পরাস্ত করতে পারছিল না।
৪৩ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে পুলিশ সদস্য ইকবালকে বলতে শোনা যায়, গুলি করে করে লাশ নামানো লাগছে স্যার। গুলি করে, মরে একটা, আহত হয় একটা। একটাই যায় স্যার, বাকিডি যায় না। এইটা হলো স্যার সবচেয়ে বড় আতঙ্কের এবং দুশ্চিন্তার বিষয়।
তিনি এক নিহতের ভিডিও চিত্রও দেখান কামালকে। তার পরনে কি ছিল সেটি নিয়েও কথা বলেন। পাশে আরেক পুলিশ সদস্যকেও কিছু একটা বলতে শোনা যায়। তার মুখে মাস্ক ছিল।
উৎখাত হওয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনোযোগ দিয়ে সেই ভিডিও দেখছিলেন। কিছু একটা ভাবছিলেন। গুলি ও নিহতের দৃশ্য দেখে তার কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এ সময় তার পাশে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
ভিডিওটি কবে, কোথায়, কে ধারণ করেছেন তা জানা যায়নি।