September 19, 2024
আন্তর্জাতিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস জাতিসংঘে, বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে বেশিরভাগ দেশ। প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ। প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নেয় ইসরায়েলও।

মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি উত্থাপন করে আরব রাষ্ট্রগুলো। এরপরই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। মানবিক কারণে যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দেন জাতিসংঘের ১২০টি সদস্যরাষ্ট্রের প্রতিনিধি। ভোটদানে বিরতি ছিল ৪৫টি দেশ। প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয় যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৩ দেশ ও ইসরায়েল।

প্রস্তাবে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে সব সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়। একই সঙ্গে বেসামরিক লোকজনের সুরক্ষা ও নির্বিঘ্ন ত্রাণসহায়তার আহ্বান জানানো হয়।

গৃহীত প্রস্তাবে চলমান জিম্মি বেসামরিক ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নিরাপত্তা, সুস্থতা এবং তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণেরও আহ্বান জানিয়ে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

ভোটের আগে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, ‘এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার অর্থ এই অর্থহীন যুদ্ধ, এই বুদ্ধিহীন হত্যাকাণ্ডকে অনুমোদন করা।’

অন্যদিকে, ইসরায়েল ভোটের এই ফলাফলকে ‘কলঙ্কজনক’ বলে নিন্দা করেছে। জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান বলেছেন, ‘যুদ্ধবিরতি মানে হামাসকে আবার অস্ত্রে সুসজ্জিত হওয়ার জন্য সময় করে দেওয়া। এই ভোটের উদ্দেশ্য শান্তি আনা নয়, এর অর্থ ইসরায়েলের হাত বেঁধে রাখা।’

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাব মেনে চলার ব্যাপারে কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। তবে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সদস্য হওয়ায় গৃহীত প্রস্তাবগুলোর নৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।

জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদে অবশ্য গত দু’সপ্তাহ ধরেই গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ বিরতি প্রসঙ্গে আলোচনা চলছে। ১৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানয়ে নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মতো প্রস্তাব তোলে রাশিয়া, যা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আপত্তির (ভেটো) কারণে বাতিল হয়ে যায়।

পরে ২৫ অক্টোবর গাজায় ত্রাণ সরবরাহ নিরাপদ রাখার জন্য ‘মানবিক বিরতি’র আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু রাশিয়া ও চীনের ভেটোর কারণে সেটিরও একই পরিণতি হয়।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের অতর্কিত হামলার জবাবে গাজা উপত্যকাকে অবরুদ্ধ করে অব্যাহত বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। বিদ্যুৎ, পানি, খাবার, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে চরম মানবিক সংকট চলছে ফিলিস্তিনি অঞ্চলটিতে। গাজায় এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৭ হাজার ৩২৬ জনের নিহত হয়েছে এবং পশ্চিম তীরে নিহত হয়েছেন ১১০ ফিলিস্তিনি। তাদের মধ্যে ৬৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

শেয়ার করুন: