খুলনায় পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ৬০
খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের কয়েক দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় পুলিশ ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে ৬০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এরমধ্যে পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।
পুলিশ ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, ছাত্ররা ৯ দফা দাবি নিয়ে মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচিতে অংশ নিতে দুপুরের পর থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে জড়ো হতে শুরু করেন। তারা নগরীর ময়লাপোতা এলাকায় এসে অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর ছাত্ররা নগরীর সাতরাস্তা মোড় এলাকায় অবস্থান নিলে পুলিশ সেখানে তাদের ঘিরে ফেলে।
দুপুর ২টার পর নগরীর সাতরাস্তা মোড় থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে সেটি রয়েল মোড়, শান্তিধাম, মডার্ন ফার্নিচার মোড়, বাইতিপাড়া, মৌলভীপাড়া, পিটিআই মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় একঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে দাবি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের। নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে শতাধিক শিক্ষার্থীকে।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর রয়েল মোড় ও ময়লাপোতা মোড়ে মিছিলের চেষ্টাকালে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। ওই সময় নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
দুপুর ১টার দিকে ময়লাপোতা মোড়ে পুলিশে ধাওয়া খেয়ে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আহসানুল্লাহ কলেজে আশ্রয় নেয়। তারা ভবনের ভেতর একটি কক্ষে প্রবেশ করে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের আটক করে পুলিশ।
আন্দোলনকারীরা জানান, সারাদেশে নিহত ছাত্রদের হত্যার বিচারের দাবিতে বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচি ছিল। খুলনায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে বেলা ১১টায় রয়েল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সকাল থেকে নগরীর রয়েল মোড়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ১২টা থেকে শিক্ষার্থীরা রয়েল মোড়ের আশপাশে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের মোবাইল চেক করতে দেখা যায় পুলিশকে। পরে তারা ময়লাপোতার মোড়ে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে সেখান থেকে আটক করা হয় ১৭ জনকে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে আল শাহরিয়ার জানান, পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারসেলের আঘাতে কমপক্ষে ৬০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গ্রেফতার করা হয়েছে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে। তাদের সন্ধ্যার মধ্যে মুক্তি দেওয়া না হলে আমরা স্বেচ্ছায় গ্রেফতার হবো।
খুলনা সদর থানার এসআই সুকান্ত জানান, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। ছাত্রদের ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দেওয়া হবে বলে কেএমপির মিডিয়া কর্মকর্তারা জানান।