খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি, নেওয়া হয়েছে সিসিইউতে
রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত দুইটার দিকে তাকে হাসপাতালের কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।
তিনি জানান, খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনায় করতে রোববার রাত সাড়ে ১১টায় দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড বৈঠকে বসে। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
জানা গেছে, চিকিৎসকরা খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থার দিকটি বিবেচনা করে মতামত দিয়েছেন তাকে আপাতত কেবিনে রাখা নিরাপদ হবে না। আর তাই সিসিইউতে রেখে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত আসে মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। তার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা একাধিকবার সংবাদ সম্মেলনে করে বলেছেন, অতি দ্রুত তার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট (প্রতিস্থাপন) করা দরকার। যেটা বাংলাদেশ সম্ভব নয়। এই জন্য তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে একাধিকবার আবেদন করে তার পরিবার। এছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে বিদেশে চিকিৎসা জন্য যেতে দিতে সরকারের প্রতি একাধিকবার আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে খালেদা জিয়াকে দেখতে গত কয়েকদিন আগে লন্ডন থেকে দেশে এসেছেন তার কনিষ্ঠ পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে।
দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ তাকে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়। তখন থেকে তিনি গুলশানের বাসভবনে অবস্থান করছেন। ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থাইটিস, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্রে জটিলতা, ফুসফুস, চোখ ও দাঁতের নানা সমস্যায় ভুগছেন। এছাড়া তার মেরুদণ্ড, ঘাড়, হাত ও হাঁটুতে বাতের সমস্যাসহ আরও কিছু শারীরিক জটিলতা রয়েছে।
২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কয়েকবার নানা অসুস্থতার কারণে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। গত বছরের জুনে বুকে ব্যথা অনুভব করলে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে ৩টি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।
চলতি বছরের ১৩ জুন রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময় হাসপাতালে ৫ দিন চিকিৎসা শেষে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়।
সর্বশেষ গত ৯ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে ওই হাসপাতালের প্রফেসর শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।