কোনো কর্মকর্তা দুর্নীতি করলে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে: পানিসম্পদ উপদেষ্টা
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, কোনো কর্মকর্তা কর্তব্য পালনের সময় কোনো ধরনের দুর্নীতি, অনিয়ম ও অবহেলা করলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুশাসন ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় মানুষের তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কাজে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে হবে।
রোববার (১৮ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন দপ্তর ও সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় ঐতিহ্যবাহী বিল ও নদীগুলোর অবৈধ দখল রোধে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এর অংশ হিসেবে আড়িয়াল, চলন, বেলাই ও বসিলা বিলের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এ লক্ষ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টাসহ আগামী সপ্তাহে আড়িয়াল বিল পরিদর্শন করা হবে। ফসলের ক্ষতি কমাতে হাওর এলাকায় যথাসময়ে বাঁধ মেরামত করার উদ্যোগ নিতে হবে।
পানিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, মানুষের পানির অধিকার নিশ্চিত করতে নদীদূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে। বড়াল, পিয়াইন, ডাউকি, সোমেশ্বরী, বালু, বুড়িগঙ্গা, মগড়া এবং করতোয়াসহ সংকটাপন্ন নদীর তালিকা প্রস্তুত করে সেখান থেকে ক্ষতিকর স্থাপনা সরিয়ে দিতে হবে। নদীর বালু এবং পাথর উত্তোলনকে নিয়ন্ত্রিত বা নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় সুপারিশমালা তৈরি করতে হবে।
নদী ভাঙন রোধে প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে এবং ভাঙন কবলিত লোকদের খাস জমিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আন্তর্জাতিক নদীগুলোতে দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে কম ব্যয়ের অত্যাবশ্যক প্রকল্প গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করতে হবে। কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে নদী যেন মারা না যায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। ১৯৯৯ সালের জাতীয় পানি নীতিমালা বাতিল করে যুগোপযোগী পানি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, যেখানে জনমতের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। নদীকে জীবন্ত সত্তা বিবেচনা করে নদী রক্ষা কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে নদীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে। সেখানে নদীর আঞ্চলিক ও স্থানীয় নামেরও স্বীকৃতি দিতে হবে, যাতে কোনো নদী শাখা নদী বা উপনদী বিবেচনায় হারিয়ে না যায়।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ এবং অধীন দপ্তরগুলোর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সমস্যা, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলোর কথা শোনেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।