কুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধ, একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত, তদন্তে কমিটি গঠন
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, যেকোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। একই সঙ্গে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বুধবার অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৯৩তম সভায় গৃহীত হয়।
সভায় মঙ্গলবার ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি প্রধান হিসেবে রাখা হয়েছে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম এম এ হাসেমকে। এই কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ শরীফুল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইভাবে, জড়িত শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার করা হবে। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর অংশ হিসেবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত রাখা হবে।
গতকাল দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যার ফলে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
এছাড়া, ক্যাম্পাসের মেডিকেল সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে ছাত্ররা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে ছিল—বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতে পারবেন না, এর জন্য আজীবন বহিষ্কারের বিধান রাখা, গতকালের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা খরচ বহন করা, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ।