করমজলে ৩৪টি ডিম দিলো বিলুপ্তপ্রায় বাটাগুরবাস্কা প্রজাতির কচ্ছপ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের বিলুপ্তপ্রায় একটি বাটাগুরবাস্কা প্রজাতির একটি কচ্ছপ চৌত্রিশটি ডিম দিয়েছে। প্রজনন প্রকল্পের পুকুর পাড়ের স্যান্ডবিচে (বালুর মধ্যে) শনিবার রাতে ওই কচ্ছপটি ডিম দেয় বলে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির।
আজাদ কবির সাংবাদিকদের বলেন, কচ্ছপের ডিম দেওয়ার পরিবেশ উপযোগী করে আগে থেকেই প্রকল্পের পুকুর পাড়ে বালুর স্যান্ডবিচ তৈরি করে রাখা হয়। সেখানে শনিবার রাতে ডিম দেয় প্রকল্পের একটি কচ্ছপ। রবিবার সকালে স্যান্ডবিচ থেকে ডিমগুলো তুলে ইনকিউভেশন (বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ) করা হয়েছে। বালুর স্যান্ডবিচ থেকে তুলে বাচ্চা ফুটানোর জন্য আবারও বালুর ইনকিউভেশনে রাখা হয়েছে ডিমগুলো। ইনকিউভেশনে সঠিক তাপমাত্রায় (২৭/২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে এ ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার কথা।
২০২১ সালের চারটি কচ্ছপ মোট ৯৬টি ডিম দেয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে ৭৯টি বাচ্চা ফুটে। এর আগে ২০২০ সালে ২টি কচ্ছপের দেওয়া ৫৬টি ডিমে বাচ্চা হয় ৫২টি। বাচ্চা ফোটার গড় হার ৯০ ভাগেরও বেশি। এখানে থাকা আরও একটি কচ্ছপ আগামী দুই একদিনের মধ্যে ডিম দিবে বলে আশা করছেন এই বন কর্মকর্তা।
করমজল কচ্ছপ প্রকল্পের স্টেশন ব্যবস্থাপক আব্দুর রব সাংবাদিকদের জানান, ২০১৪ সালে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে গড়ে তোলা হয় দেশের বিলুপ্ত প্রায় বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপের প্রজনন প্রকল্প। ৪টি পুরুষ ও ৪টি নারী কচ্ছপ দিয়েই এ প্রজনন কার্যক্রম শুরু করা হয়।
২০১৭ সাল থেকে এ প্রকল্পে কচ্ছপ ডিম দিতে শুরু করে। বর্তমানে এই প্রকল্পে ছোট বড় মিলিয়ে ৪শ ৩৬ টি কচ্ছপ রয়েছে। বিলুপ্ত হতে বসা বাটাগুরবাস্কা প্রজাতির কচ্ছপের বংশবিস্তার, প্রজনন, খাদ্যাভাস, আচরণ ও বিচরণক্ষেত্রসহ নানা বিষয়ে জানতে গবেষণার জন্যই এ প্রকল্প চালু করে বনবিভাগ।
বনবিভাগের এ প্রকল্পের সঙ্গে অস্ট্রিয়ার জুভিয়েনা, আমেরিকার টিএসএ ও ঢাকার প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন রয়েছে। এই প্রকল্পটি সফলতার দিকেই অগ্রসর হচ্ছেন বলে মনে করছেন এই কর্মকর্তা।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়