February 21, 2025
বিনোদন জগৎ

এরকম একটা ঘরে হয়তো আমার বন্ধুকে আটকে রাখা হয়েছিল, আয়নাঘর নিয়ে ফারুকী

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের টর্চার সেল ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরইমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল তা। এবার ‘আয়নাঘর’নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিলেন সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুকে আয়নাঘর পরিদর্শনকালীন কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছেন ফারুকী> সঙ্গে লিখেছেন, এরকমই কোনো একটা ঘরে হয়তো আমার বাল্যবন্ধু সাজেদুল ইসলাম সুমনকে আটকে রাখা হয়েছিল। এইরকমই কোনো একটা ঘরে অজানা আশংকায় সে কেঁপে কেঁপে উঠতেছিল। এইরকম একটা ঘরে বসেই হয়তো সে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে কাঁদতে কাঁদতে বলছিল ‘আল্লাহ, তুমি আমারে এই বারের জন্য বাঁচাইয়া দাও। আমি আর রাজনীতি টাজনীতি করব না। আমার সন্তানের জন্য আমারে বাঁচাইয়া দাও। আমার মায়ের জন্য আমারে বাঁচাইয়া দাও।’

এরপর লেখেন, এরকমই একেকটা ঘরে আমরা সতেরো কোটি মানুষ আটকা ছিলাম ষোলো বছর। আর গোপনে বলতাম, আল্লাহ এই ডাইনির হাত থেকে আমাদের বাঁচাইয়া দাও।

স্মৃতিচারণা করে ফারুকী লিখেছেন, সুমনের সাথে আমার শেষ কথা হয় উত্তরার এক হাসপাতালে লুকাইয়া থাকা অবস্থায়। ওর ভাগনে আবরারের একটা শ্যুট ছিল আমার সাথে। স্পষ্ট মনে আছে ওর শেষ কথা, ‘দোস্ত, আবরাররে তুই ইজি কইরা নিস। নাইলে অ্যাকটিং খারাপ করবো’।

আরও যোগ করেছেন, এমনই এক জালিমের শাসনে ছিলাম যে তোর জন্য, সুমন, একটা কথাও বলতে পারি নাই। পরে জানলাম মানুষরুপী জানোয়ার জিয়াউল আহসানের নির্দেশে তোরে ইনজেকশন দিয়ে মেরে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়। যে বাবার ঘরে ফিরে সন্তানের সাথে ভাত খাওয়ার কথা ছিল তাকে এই ডাইনির দল শীতলক্ষ্যার মাছেদের খাবারে পরিণত করে। এই হায়েনাদের হয়ে যখন কেউ কথা বলতে আসে, আমার মাথায় রক্ত উঠে যায়। আমি আমার কমপোজার লুজ করি।

‘আয়নাঘর’পরিদর্শনের সময় ড. ইউনূসের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন উপদেষ্টা, দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম কর্মী এবং কয়েকজন ভুক্তভোগী। তিনি ঘুরে ঘুরে সেখানকার বীভৎস দৃশ্যগুলো দেখেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আওয়ামী লীগ শাসনামলকে ‘আইয়ামে জাহিলিয়াতের’ সঙ্গে তুলনা করেন। আয়নাঘরে যে নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হতো সেটাকেও জাহেলি যুগের সঙ্গে তুলনা করেন।

শেয়ার করুন: