November 13, 2024
টেকনোলজি

এই প্রথম মহাকাশে পাঠানো হলো কাঠের তৈরি স্যাটেলাইট

এই প্রথম মহাকাশে পাড়ি জমাল বিশ্বের প্রথম কাঠের তৈরি কৃত্রিম উপগ্রহ! এটি তৈরি করেছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। আর উপগ্রহটিকে নিয়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে স্পেসএক্স-এর একটি রকেট।

মঙ্গলবার জাপানের সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের তরফে এই তথ্য সামনে আনা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এ বিভিন্ন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে অভিযান শুরু করা হয়েছে, জাপানি প্রযুক্তিতে তৈরি বিশ্বের প্রথম কাঠের উপগ্রহটি সেই অভিযানেই ব্যবহার করা হচ্ছে।

জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, অভিযান শেষে কাঠের তৈরি ওই কৃত্রিম উপগ্রহটি যে মুহূর্তে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে, সঙ্গে সঙ্গে সেটি পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।

বিজ্ঞানীদের এই উদ্দেশ্য সফল হলে, বাতিল হয়ে যাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস হওয়ার সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে যে ধাতব আবর্জনা সৃষ্টি করে, তার উৎপাদন ভবিষ্যতে বন্ধ করা সম্ভব হবে।

জাপানি বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, এই ধরনের ধাতব আবর্জনা শুধুমাত্র যে পৃথিবীর পরিবেশ দূষিত করে, তাই নয়। এই ধাতব আবর্জনা টেলিযোগাযোগমাধ্যমেও ভীষণভাবে ব্যাঘাত ঘটায়।

আপাতত এই উপগ্রহটিকে একটি পরীক্ষামূলক কৃত্রিম উপগ্রহ হিসাবেই গণ্য করা হচ্ছে। অনেকটা কাঠের বাক্সের মতো দেখতে এই উপগ্রহটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘লিগনোস্যাট’। যার দৈর্ঘ্য মাত্র ১০ সেন্টিমিটার (৪ ইঞ্চি)।

কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান স্পেসোলজি সেন্টারের তরফে জানানো হয়েছে, আমেরিকার ফ্লোরিডায় অবস্থিত নাসা-র কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেসএক্স-এর একটি রকেটে চেপে কাঠের তৈরি ওই কৃত্রিম উপগ্রহটি মহাকাশে যাত্রা করেছে।

‘জাপান এয়ারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি’-এর বিজ্ঞানীরা ওই ছোট্ট কাঠের উপগ্রহটির জন্য একটি বিশেষ কন্টেনার তৈরি করেছেন। সেটির মধ্যে বসিয়ে সংশ্লিষ্ট উপগ্রহটি মহাকাশে পাঠানো হয়েছে।

লিগনোস্যাট তৈরির দায়িত্বে যারা ছিলেন, তাদের মধ্য়ে অন্যতম সুমিতোমো ফোরেস্ট্রির মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছেন, তাঁদের নির্মাণ করা বিশ্বের প্রথম কাঠের উপগ্রহটির উৎক্ষেপণ ‘সফল হয়েছে’।

তিনি বলেন, ‘ওই উপগ্রহটি শিগগিরই আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। এবং তার প্রায় একমাস পর বহির্ভাগের মহাকাশে সেটি ছেড়ে দেওয়া হবে।’ মহাকাশে এটি কতদিন টিকে থাকতে পারে, তা যাচাই করে দেখতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আগামী দিনে এই কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে বিজ্ঞানীদের তথ্য পাঠানো হবে। তারা সেই তথ্য যাচাই করে দেখবেন, কাঠের তৈরি এই ধরনের কৃত্রিম উপগ্রহ আদৌ চরম প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে পারবে, নাকি পারবে না! বিশেষ করে, তাপমাত্রার তারতম্যের প্রভাব এই উপগ্রহ সহ্য করতে পারে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরেরই প্রথম দিকে কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ্চারী তথা বিশেষ অধ্যাপক তাকাও দোই বলেছিলেন, ‘যে সমস্ত কৃত্রিম উপগ্রহ কোনও ধাতু দ্বারা নির্মিত নয়, সেগুলোর ব্যবহারই নিয়মিত করা উচিত।’

শেয়ার করুন: