December 14, 2025
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

উপকূল বাঁচাতে বনায়ন ও কৃষি সংরক্ষণই মূল চাবিকাঠি : পরিবেশ উপদেষ্টা

উপকূল বাঁচাতে আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ও কৃষিজমিকে সংরক্ষণ করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, পানি সম্পদ এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খাদ্য নিরাপত্তা সংকট ও দারিদ্র্য বৃদ্ধির মতো চ্যালেঞ্জের মুখে স্বল্পমেয়াদি ও মধ্যমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে দ্রুত ও দূরদর্শী পদক্ষেপ নেওয়াই এখন সময়ের দাবি। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয় সরণিতে বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় উপকূল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, উপকূলীয় এলাকার সমস্যা প্রতিদিন নতুন মাত্রা পাচ্ছে। প্রাকৃতিক সম্পদ ও কৃষিজমি ধ্বংস হচ্ছে, খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে, এবং দারিদ্র্য ও পানি সংকট বেড়ে চলেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে জলবায়ু, উদ্বাস্তু, মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ এবং কার্বন শোষণ হ্রাসের মতো সমস্যা, যা দ্রুত মোকাবিলা করা জরুরি। তিনি আরও বলেন, আগের পরিকল্পনা বাতিল হলেও অনেক ক্ষয়ক্ষতি থেকে গেছে। চিংড়িঘের ভাঙন পুনরায় কোটি টাকার বেশি ব্যয় সাপেক্ষ। এই ক্ষতির দায় সরকারকেই নিতে হচ্ছে। নীতিগত অবস্থান বাস্তবতায় রূপ না পেলে কোনো কাজে আসবে না। সম্মেলনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন, নৌযান চলাচলে বাধা এবং স্থানীয় জনগণের আয় হ্রাসের বিষয়ও তুলে ধরা হয়। উপদেষ্টা জানান, কোস্ট, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন সংস্থা ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সমর্থনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বিপুল জনগোষ্ঠী বসবাস করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাস্তব রূপ নিলে এই জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্টে শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প নেই। পানি সম্পদ, নদী রক্ষা, পরিবহন ও কৃষি—সব খাতকে সমন্বিতভাবে বিবেচনা করা হবে। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আহ্বায়ক গওহার নঈম ওয়ারা, সঞ্চালনা করেন প্রাণের প্রধান নির্বাহী নুরুল আলম মাসুদ। উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. এনায়েত উল্লাহ, বন অধিদপ্তরের উপপ্রধান বন সংরক্ষক মো. জাহিদুল কবির, ঢাকায় সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ডিপাক এলমার এবং কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী প্রধান রেজাউল করিম চৌধুরী। দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলার কৃষি, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, জেলে সম্প্রদায়, অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা তিন শতাধিক প্রতিনিধি, গবেষক, শিক্ষার্থী ও ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর সদস্যরা এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের লক্ষ্য উপকূলীয় অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন ও মানুষের জীবনমান রক্ষা করা, যেখানে বনায়ন ও কৃষি সংরক্ষণকে কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
শেয়ার করুন: