ইসি গঠনে সার্চ কমিটিতে ৩০৯ নাম
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও ব্যক্তিগতভাবে ৩০৯ জনের নাম জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন সার্চ কমিটির সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। শনিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে বিশিষ্টজনদের থেকে প্রস্তাব নিতে সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে দুই দফা বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
বৈঠকে কি কি প্রস্তাব এসেছে জানতে চাইলে খন্দকার আনোরুল ইসলাম বলেন, সার্চ কমিটি যাতে পদক্ষেপ নিতে পারে, সেই বিষয়ে উনারা বক্তব্য দিয়েছেন। তারা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন, কমিটি সব নোট করেছে। রবিবার বিকালে আরেকটি বৈঠক হবে। সেটির পরামর্শ নিয়ে তারপর কমিটি কর্ম পদ্ধতি ঠিক করবে। এর আগে বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও ব্যক্তি পর্যায় থেকে কমিশন গঠনের জন্য নাম নিয়েছে সার্চ কমিটি।
এ বিষয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো থেকে ১৩৬ জনের, পেশাজীবীদের থেকে ৪০ জনের, ব্যক্তিগতভাবে ৩৪ জনের এবং বিভিন্ন ইমেইলের মাধ্যমে ৯৯ জনের নাম পেয়েছি। মোট ৩০৯ জনের নাম পাওয়া গেছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কমিটি বসবে, এগুলো দেখে কমিটি সিলেকশন করবে।
নির্বাচন কমিশন থেকে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১৫টি দল নাম দেয়নি এবং সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে যেসব নাম জমা দেবে তা প্রকাশ করতে বিশিষ্টজনদের প্রস্তাবের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় সদস্য সচিবকে।
এ বিষয়ে সার্চ কমিটির সিদ্ধান্ত কী জানতে চাইলে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এগুলো উনাদের সাজেশন, কমিটি যখন বসবে তখন উনাদের সাজেশন নিয়ে সিদ্ধান্ত ঠিক করবে।
বিএনপিসহ যেসব দল নাম প্রস্তাব করেনি, তাদের কাছ থেকে নাম নেওয়ার জন্য আবার কোনো সুযোগ দেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, রবিবার কমিটির মিটিংয়ের পর বোঝা যাবে।
সার্চ কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে বৈঠকে ছিলেন কমিটির সদস্য বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
বেলা সোয়া ১১টা থেকে সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠিত প্রথম দফা বৈঠকে বিশিষ্টজনদের মধ্যে যোগ দেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ এফ এম হাসান আরিফ, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, প্রবীণ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান ও অধ্যাপক আসিফ নজরুল, এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মাহফুজা খানম, বেসরকারি সংস্থা ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুর্শিদ ও ফেয়ার ইলেকশন মনটরিং অ্যালায়েন্স (ফেমা) সভাপতি মুনিরা খানও এ বৈঠকে অংশ নেন।
অন্যদিকে দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফা বৈঠকে অংশ নেন দৈনিক আজকের পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক গোলাম রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান জাফরুল্লাহ চৌধুরী, দৈনিক জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাবু, দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, এনটিভির বার্তা সম্পাদক জহিরুল আলম ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক স্বদেশ রায়।
গত শনিবার রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন। কমিটি দুটি বৈঠক করে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কাছে থেকে প্রস্তাব নেওয়া, বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠকসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়। অপরদিকে শুক্রবার প্রস্তাবিত নাম জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে কয়েকশ নাম জমা পড়ে সার্চ কমিটিতে।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়